ভিক্ষা নিষিদ্ধ করতে আইন চালু করতে উদ্যোগী মিজ়োরাম সরকার। বিরোধী শিবিরের আপত্তির পরেও বুধবার উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের বিধানসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে মিজ়োরাম ভিক্ষা নিষিদ্ধকরণ বিল, ২০২৫। সে রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী লালরিনপুইয়ের দাবি, শুধু ভিক্ষা নিষিদ্ধ করাই এর লক্ষ্য নয়। ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়তা করাও এই বিলের লক্ষ্য।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর কথায়, মিজোরামের সামাজিক পরিকাঠামো, গির্জা, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সম্মিলিত উদ্যোগের ফলে সে রাজ্যে ভিক্ষুকের সংখ্যা খুবই কম রয়েছে। তবে এর মধ্যেও সম্প্রতি ভিক্ষা চাওয়া বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে সরকার। মিজ়োরামের সমাজকল্যাণ দফতরের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, সে রাজ্যের রাজধানী আইজলে অন্তত ৩০ জন ভিক্ষুক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আইজ়লের বাইরের বাসিন্দাও রয়েছেন। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মিজ়োরামের সাইরাং-সিহমুই রেললাইনের উদ্বোধন করবেন। ওই রেলপথ চালু হয়ে গেলে অন্য রাজ্য থেকেও ভিক্ষুকেরা মিজ়োরামে চলে আসতে পারেন বলে মনে করছেন লালরিনপুই।
এই বিল আইনে পরিণত হলে কী ভাবে তা কার্যকর হবে, সেই ব্যাখ্যাও দেন মন্ত্রী। লালরিনপুই জানান, প্রথমে রাজ্যস্তরে একটি ‘ত্রাণ পর্ষদ’ (রিলিফ বোর্ড) গঠন করা হবে। ভিক্ষুকদের অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করবে ওই পর্ষদ। ওই অস্থায়ী ঠিকানাগুলিতে প্রথমে রাখা হবে ভিক্ষুকদের। তার পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যেককে নিজ বাড়িতে বা নিজ রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:
ভারতে ভিক্ষা নিষিদ্ধ করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও আইন নেই। তবে আঞ্চলিক ভাবে কোনও কোনও এলাকায় ভিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেমন চলতি বছরের শুরুর দিকে মধ্যপ্রদেশের ভোপাল এবং ইনদওর জেলায় ভিক্ষা নিষিদ্ধ হয়েছে। তবে এমন কড়াকড়ি নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে অতীতে। যেমন ‘বম্বে প্রিভেনশনস অফ বেগিং অ্যাক্ট’, ১৯৫৯ বিভিন্ন সময়ে সমালোচিতও হয়েছে। তা ছাড়া ওই আইন থাকার পরেও মুম্বই শহরে ভিক্ষা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।