নিজস্ব সংবাদদাতা —ফাইল চিত্র।
করোনার তৃতীয় ঢেউ রুখতে পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে কড়া কোভিড-বিধি পালনে জোর দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ স্তিমিত হতেই পর্যটকের ভিড় উপচে পড়েছে শিমলা, কুলু, মানালি, মুসৌরির মতো শৈলশহরে। এমন পরিস্থিতি নতুন করে সংক্রমণ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা সমস্ত রাজ্যকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তাঁর নির্দেশ, পর্যটনকেন্দ্র ও গণ-পরিবহণে কোভিড-বিধি লঙ্ঘন অবিলম্বে রুখতে হবে।
করোনার ধাক্কায় প্রায় দু’বছর দেশের মানুষ গৃহবন্দি। তাই সংক্রমণ কমতেই বেড়াতে বেরিয়েছেন অনেকে। ধুঁকতে থাকা পর্যটন শিল্পের জন্য এটি সুখবর হলেও ঘুরতে বেরিয়ে মানুষ যে ভাবে যথেচ্ছ কোভিড-বিধি ভাঙতে শুরু করেছে, তাতে প্রমাদ গুনেছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘ভিড় তো করোনা ছড়ানোর জন্য আদর্শ। ভিড়ে করোনা-আক্রান্ত কেউ থাকলে তিনি অন্যদের সংক্রমিত করতে পারেন। তাই দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা যখন এখনও পুরোপুরি কাটেনি, তখন এ ভাবে মাত্রাছাড়া জনসমাগম তৃতীয় ঢেউকে টেনে আনতে পারে।’’
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছে আরও দুশ্চিন্তার বিষয় হল, করোনার ‘আর ফ্যাক্টর’ (রিপ্রোডাকশন নম্বর) বেশ কিছু রাজ্যে ১-এর উপরে। আজ স্বরাষ্ট্রসচিবের চিঠিতে বলা হয়েছে, গণ-পরিবহণ, পর্যটনস্থল, বাজারগুলিতে উপস্থিত ভিড়ের কোভিড-বিধি মেনে না-চলার কারণে বেশ কিছু রাজ্যে ‘আর ফ্যাক্টর’ ক্রমশ বাড়ছে, যা দুশ্চিন্তার। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, এক জন আক্রান্তের মাধ্যমে কেবল আর এক জনই আক্রান্ত হলে সে ক্ষেত্রে ‘আর ফ্যাক্টর’ ১ ধরা হয়ে থাকে। ‘আর ফ্যাক্টর’ ১-এর বেশি হলে ধরে নিতে হবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। তাই চিঠিতে বলা হয়েছে, দোকান, বাজার, শপিং মল, রেল স্টেশনের মতো হটস্পটগুলিতে কোভিড-ভিধি যাতে মেনে চলা হয়, তা দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের। ওই হটস্পটগুলির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনকে দায়বদ্ধ করার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। যেখানে কোভিড-বিধি অমান্য করা হচ্ছে বা হয়েছে, সেই এলাকাগুলিকে পুনরায় বিধিনিষেধের আওতায় নিয়ে আসারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি কোনও দোকান, বাজার কিংবা শপিং মলে কোভিড-বিধি অমান্য করা হয়, সে ক্ষেত্রে তা সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হোক এবং যারা কোভিড-বিধি ভাঙছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সংশ্লিষ্ট এলাকার কোভিড-বিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব যে সরকারি আধিকারিকের উপরে রয়েছে, প্রয়োজনে তাঁর বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে।
দেশে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা আগের চেয়ে কমলেও সংক্রমণ একেবারে নির্মূল হয়নি। বরং কেরল, মহারাষ্ট্র কিংবা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে সুযোগ পেলেই মাথাচাড়া দিচ্ছে সংক্রমণ। চিঠিতে বলা হয়েছে, এই পর্যায়ে কোনও ধরনের আত্মতুষ্টি তথা গা-ছাড়া মনোভাব উল্টে বিপদ ডেকে আনতে পারে। সেই কারণে নতুন করে সংক্রমণ যাতে না-ছড়ায়, তার জন্য রাজ্যগুলিকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। পাঁচ দফা কৌশল— পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসা, টিকাকরণ ও কোভিড-বিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy