গরুর পরে এ বার মুরগি!
গো-মাংসের মতো বন্ধ করতে হবে ব্রয়লার বা দেশি মুরগি খাওয়া— এমন ফরমান এখনও জারি হয়নি ঠিকই। কিন্তু আপাতত মুরগি কূলের জীবনের মানোন্নয়ন ও বাসস্থানের রক্ষণাবেক্ষণে উদ্যোগী হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। পরিস্থিতি যা, তাতে এই মুহূর্তে মুরগি মেরে খেতে সমস্যা নেই। কিন্তু মারার আগে পর্যন্ত ভারতীয় সংবিধান মেনে মুরগিকে তার উপযুক্ত বাঁচার পরিবেশ দিতে হবে। যার অর্থ, তন্দুরি, কাবাব কিংবা ঝোলে ভবিতব্য লেখা থাকলেও, শেষের ক’টা দিন যাতে মুরগিদের ভাল কাটে, তার রাস্তা খুঁজতে আইন কমিশনে এখন তোলপাড় চলছে।
গাড়িতে গাদাগাদি করে মুরগি ভরে নিয়ে যাওয়া চেনা চিত্র। কিংবা বাজারের খাঁচার ভিড়ে জবুথবু হয়ে বসে থাকা মুরগিকে জবাইয়ের জন্য আঙুল দিয়ে চিনিয়ে দেওয়া— এই ছবিগুলিই এখন পাল্টাতে চাইছে আইন কমিশন। রীতিমতো সংবিধানের দোহাই মেনে। সংবিধানের ৫১এ (জি) ধারা বলছে, প্রত্যেক ভারতবাসীর উচিত নদী, জঙ্গল, জলাশয়, বন্য প্রাণীর স্বাভাবিক পরিবেশ রক্ষা করা ও সেটির উন্নতিসাধন করা এবং যে কোনও জীবন্ত প্রাণীর প্রতি সহনাভূতিশীল হওয়া। এই ধারা মেনেই এ বার কপাল খুলতে চলেছে মুরগিদের।
নেপথ্যে অবশ্যই কেন্দ্রীয় পশুপ্রেমী মন্ত্রী মেনকা গাঁধী। গোটা দেশেই মুরগিরা যে ভাবে দুরবস্থার শিকার— তা নিয়ে কিছু দিন আগে সরব হন নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মেনকা। মুরগিদের যে ভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় খাঁচায় ঠুসে নিয়ে যাওয়া হয় কিংবা কাটার আগে যে ভাবে গাদাগাদি করে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়— তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মেনকা। পরিস্থিতি পাল্টাতে আইনগত ভাবে কোনও বিকল্প ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা জানতে আইন মন্ত্রকের দ্বারস্থ হন তিনি। আইন মন্ত্রক সেই সুপারিশ পাঠিয়ে দেয় আইন কমিশনের কাছে। তৎপর হয় আইন কমিশন। বিষয়টি নিয়ে কী করা যেতে পারে— তা জানতে নিজেদের ওয়েবসাইটে দেশের মানুষের পরামর্শ চেয়েছে কমিশন।
আইন কমিশনের বক্তব্য, কোনও জীবন্ত প্রাণীর জন্য পরিবেশ রক্ষা ও তার উন্নতসাধন করা সাংবিধানিক দায়িত্ব। তাই মুরগিদের থাকার পরিবেশের উন্নতির জন্য পোলট্রি ফার্মের প্রতিনিধি, মুরগির পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা, মুরগি ব্যবসায়ী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সরকারি দফতরের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy