Advertisement
০৪ মে ২০২৪

জনতা পরিবারের তিলক অনুষ্ঠানে মধ্যমণি তিনিই

তিন হাজারেরও বেশি ভিআইপি অতিথি। কিন্তু শো-স্টপার তিনিই। তাঁর সামনে অমিতাভ বচ্চনের মতো বলিউড তারকার উপস্থিতিও ফিকে হয়ে গেল আজ। উত্তরপ্রদেশের সাইফাই গ্রামে তিনিই ছিলেন সব আকর্ষণের কেন্দ্রে। সপা নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবের নাতি তেজপ্রতাপ সিংহের তিলক অনুষ্ঠান ছিল আজ। আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের ছোট মেয়ে রাজলক্ষ্মীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন সপা সাংসদ তেজপ্রতাপ।

মুলায়ম সিংহ যাদবের নাতি তেজপ্রতাপ সিংহের সঙ্গে বিয়ে হবে লালুপ্রসাদের মেয়ে রাজলক্ষ্মীর। তারই তিলক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার সাইফাই গ্রামে। ছবি: পিটিআই

মুলায়ম সিংহ যাদবের নাতি তেজপ্রতাপ সিংহের সঙ্গে বিয়ে হবে লালুপ্রসাদের মেয়ে রাজলক্ষ্মীর। তারই তিলক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার সাইফাই গ্রামে। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা
সাইফাই (উত্তরপ্রদেশ) শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৯
Share: Save:

তিন হাজারেরও বেশি ভিআইপি অতিথি। কিন্তু শো-স্টপার তিনিই। তাঁর সামনে অমিতাভ বচ্চনের মতো বলিউড তারকার উপস্থিতিও ফিকে হয়ে গেল আজ। উত্তরপ্রদেশের সাইফাই গ্রামে তিনিই ছিলেন সব আকর্ষণের কেন্দ্রে। সপা নেতা মুলায়ম সিংহ যাদবের নাতি তেজপ্রতাপ সিংহের তিলক অনুষ্ঠান ছিল আজ। আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের ছোট মেয়ে রাজলক্ষ্মীর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছেন সপা সাংসদ তেজপ্রতাপ। নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে বলিউড তারকা, তিলক অনুষ্ঠানে অতিথি তালিকায় ছিল দেশের তাবড় হাই প্রোফাইল ব্যক্তিত্বের নাম। কিন্তু জনতা পরিবারের সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই প্রচারের যাবতীয় আলো কেড়ে নিলেন আজ।

সাইফাই গ্রামে আজ মেরেকেটে আধ ঘণ্টার মতো ছিলেন মোদী। কিন্তু গ্রামের বিমানঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রীর বিমান নামার পর থেকেই উত্তেজনাটা টের পাচ্ছিল গোটা সাইফাই। বিমানঘাঁটি থেকে গাড়ি করে সোজা অনুষ্ঠানের মণ্ডপে পৌঁছন মোদী। গাড়ি থেকে নেমে মূল অনুষ্ঠান মঞ্চের দিকে যখন হাঁটছেন, প্রধানমন্ত্রীর একটা ছবি লেন্সবন্দি করার জন্য তত ক্ষণে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। কেউ পিছনের চেয়ার ছেড়ে উঠে এসেছেন সামনের দিকে। কেউ আবার পরিচিত সাংবাদিকদের দেখে বাড়িয়ে দিয়েছেন নিজের মোবাইল। তিলক অনুষ্ঠান কভার করতে আসা সাংবাদিকের প্রতি কারও আর্জি, “দয়া করে সামনে থেকে প্রধানমন্ত্রীর একটা ভাল ছবি তুলে দিন।”

মঞ্চে ওঠার পরে নিজেও বিষয়টি আঁচ করেন মোদী। উপস্থিত সব অতিথির উদ্দেশে হাত নাড়েন তিনি। ব্যস। গোটা অনুষ্ঠান মণ্ডপ তখন হাততালিতে ফেটে পড়ছে। এর পরই পাত্রের দাদু আর কনের বাবার সঙ্গে হাত মেলান মোদী। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশও তখন হাজির হয়েছেন বাবার পাশে। বাবা-ছেলে মিলে মোদীকে একটি শাল উপহার দেন। ঘিয়ে রঙা কুর্তা আর হলুদ হাতকাটা জ্যাকেট পরা মোদীর ছবি তুলতে ব্যস্ত সবাই। প্রথমে লালু আর মুলায়মের মাঝে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের জন্য খানিক ক্ষণ পোজ দেন মোদী। আর এর পরই বাড়ির মহিলারা হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েন সেখানে। উদ্দেশ্য একটাই, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তোলা। বাড়ির কচিকাঁচাদের যাবতীয় দাবি-দাওয়াও এর পর হাসিমুখেই মেটালেন মোদী। তবে শুধু লালু-মুলায়মের বাড়ির লোকই নন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সপা নেতারাও মোদীর ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি লাগিয়ে দিয়েছিলেন আজ। এক বিধায়ক তো বলেই ফেললেন, “খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এত কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছি। ওঁর ছবি তুলব না?”

কিছু ক্ষণ মণ্ডপে থেকে পাত্রের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করার পরে বেরিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেন মোদী। অখিলেশ তাঁকে বিমানঘাঁটি পর্যন্ত পৌঁছে দেন। মোদী চলে যাওয়ার পরেও অবশ্য সেলিব্রিটি অতিথিদের আসা-যাওয়া থমকে যায়নি। সস্ত্রীক অমিতাভ থেকে শুরু করে বহু বলিউড তারকাই আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অমিতাভ-জয়া অবশ্য মিনিট দশেকের বেশি থাকেননি। জয়ার বেশি ক্ষণ না থাকার বিষয়টি নিয়ে উপস্থিত সপা নেতাদের ক্ষোভও ছিল চোখে পড়ার মতো। এসেছিলেন সপার বহিষ্কৃত নেতা অমর সিংহ। জেডিইউ সভাপতি শরদ যাদব, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল গৌর, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রঘুবংশ প্রসাদ, উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ দত্ত তিওয়ারি, বিজেপির বিতর্কিত সাংসদ সাক্ষী মহারাজও ছিলেন এই অনুষ্ঠানে।

তিলক অনুষ্ঠানে আজ সারাক্ষণ খোশমেজাজেই দেখা গিয়েছে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদকে। কনের বাবা আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমার মেয়ের বিয়ে নিয়ে এখন সারা দেশে জোর হইচই পড়ে গিয়েছে। মুলায়ম অবশ্য পণ হিসেবে এক টাকাও চাননি।”

মুলায়মের পরিবার সূত্রে খবর, সব মিলিয়ে মোট এক লক্ষ ২৫ হাজার অতিথি আজ নিমন্ত্রিত ছিলেন। তার মধ্যে ভিআইপি অতিথির সংখ্যাই প্রায় তিন হাজার। অতিথিদের থাকার জন্য ব্যবস্থা ছিল সুইস কটেজের। তবে এত সংখ্যক ভিআইপি অতিথি সামলাতে আজ হিমশিম খেয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। দিনের শেষে কারও কারও মুখে অবশ্য স্বস্তির হাসি। তাঁরা বলছেন, “তিলক অনুষ্ঠান তো সামলে দিলাম। এর পর মূল বিয়ে তো দিল্লিতে।

এর পর ঠেলা সামলাবেন সেখানকার কর্তারা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE