Advertisement
E-Paper

ওবামার দেশে দাঁড়িয়ে তাঁকেই কটাক্ষ মোদীর

এর আগে বলেছিলেন দুবাইয়ের স্টেডিয়ামে এক জনসভায়। এ বার বারাক হুসেন ওবামার দেশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমেরিকার দ্বিমুখী নীতির সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তালিবানের সঙ্গে পরোক্ষ সমঝোতার জন্য খোদ ওবামা প্রশাসনই এই নীতি নিয়েছে।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৭
আবার কাছাকাছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বারাক ওবামা। সোমবার। ছবি: রয়টার্স।

আবার কাছাকাছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বারাক ওবামা। সোমবার। ছবি: রয়টার্স।

এর আগে বলেছিলেন দুবাইয়ের স্টেডিয়ামে এক জনসভায়। এ বার বারাক হুসেন ওবামার দেশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমেরিকার দ্বিমুখী নীতির সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তালিবানের সঙ্গে পরোক্ষ সমঝোতার জন্য খোদ ওবামা প্রশাসনই এই নীতি নিয়েছে। তাকে কার্যত নস্যাৎ করে মোদী এ দিন জানিয়ে দেন, ভাল সন্ত্রাস-খারাপ সন্ত্রাস বলে কিছু হয় না!

সোমবার ওবামার সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই এ ভাবে আবহ তৈরি করে দিয়েছিলেন মোদী। তার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট-সহ শীর্ষ মার্কিন নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বুঝিয়ে দেন, আফগানিস্তানে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাস গোটা দক্ষিণ এশিয়ার পক্ষে বিপদ।

বৈঠকে কথা হয়েছে আরও নানা বিষয়ে। যেমন, পরিবেশ রক্ষা বা নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের জন্য স্থায়ী সদস্যপদ। কিন্তু এ সবের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উঠে এসেছে সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ। যে বিষয়ে সান হোসেতে প্রবাসী ভারতীয়দের সভা থেকেই সুর চড়ান তিনি। তাঁর বক্তব্য, সন্ত্রাসের সংজ্ঞা ঠিক হয়নি বলে বিতর্ক চলতেই পারে, কিন্তু সন্ত্রাসের ভাল-মন্দ ভেদ হয় না। পাকিস্তানের নাম না করেই এর পরে তিনি বলেন, ‘‘৪০ বছর ধরে ভারত সন্ত্রাসবাদের শিকার। গোটা বিশ্বেরই এটা বোঝা উচিত, সন্ত্রাস যে কোনও জায়গায় কাউকে আঘাত করতে পারে।’’

কূটনীতিকদের মতে, এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন মোদী। এখন নিউ ইয়র্কে রয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও। তাই সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়ালেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে কড়া বার্তা দিয়েছেন পশ্চিমী দুনিয়াকে।

দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমী দুনিয়ার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছে নয়াদিল্লি। ভারতে আগুন জ্বালানোর ক্ষেত্রে পাক সেনা ও আইএসআইয়ের মদতের কথা যথাসম্ভব এড়িয়ে যায় আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলি। আফগানিস্তানে শান্তি আনার ক্ষেত্রে তালিবানের একাংশের সঙ্গে আশরফ ঘানি সরকারের আলোচনায় পাকিস্তানের মধ্যস্থতাই চেয়েছে ওয়াশিংটন। তাই ভারত-সহ গোটা বিশ্বকে শোনানো হয়েছে ‘ভাল তালিবান’, ‘খারাপ তালিবান’-এর কথা। কূটনীতিকদের মতে, এই দ্বিচারিতার কথা এত স্পষ্ট ভাবে এর আগে কেউ তুলে ধরেননি।

ঘটনা হল, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় নিজের বক্তৃতায় সন্ত্রাসকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন ওবামা। আইএসের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর কথা তুলে জানিয়েছেন, ধর্মের সঙ্গে সন্ত্রাসের যোগ নেই। জঙ্গিরা যখন কারও গলা কেটে ফেলে, তখন তারা গোটা মানবজাতিকেই আঘাত করে। রাষ্ট্রপুঞ্জে জর্ডনের রাজা আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠকের সময়ে প্রায় একই সুরে কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী।

কূটনৈতিক সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান নিয়ে দিল্লির উদ্বেগের কথা ওবামাকে সবিস্তার জানিয়েছেন মোদী। পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় কোনও কাজই হচ্ছে না বলে মনে করে দিল্লি। বরং মার্কিন বাহিনী সরতে শুরু করার পরে সে দেশে অস্থিরতা বাড়ছে। একাধিক বার হামলা হয়েছে ভারতীয় কনসুলেট এমনকী রাষ্ট্রদূতকে লক্ষ করেও। পাক মদতে পুষ্ট সন্ত্রাস যে ভারত-সহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা নষ্ট করে দিতে পারে, সে কথা আজ ওবামাকে জানিয়েছেন মোদী।

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের পক্ষে এই সফরের শুরু থেকেই সওয়াল করে গিয়েছেন মোদী। এই বিষয়ে আমেরিকা মৌখিক সমর্থন দিলেও লিখিত প্রতিশ্রুতি দেয়নি। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, দক্ষিণ এশিয়ায় সব দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে ভারতের। তাই ওই গোটা এলাকার স্বার্থেই ভারতের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ পাওয়া উচিত। এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্কার দ্রুত শেষ করতে আমেরিকার উদ্যোগী হওয়া উচিত।

আজ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এবং কাতারের আমিরের সঙ্গে বৈঠকেও সন্ত্রাস দমনকেই গুরুত্ব দিয়েছেন মোদী। বিশ্বকে বোঝাতে চেয়েছেন, এখনই সন্ত্রাস নিয়ে পদক্ষেপ না করলে, আগুনে পুড়তে হবে সবাইকেই।

agni roy terrorism modi obama american double stand us double stand modi obama stand fight terrorism abpnewsletters MostReadStories
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy