Advertisement
E-Paper

ঘৃণা ছড়াচ্ছেন মোদী, অভিযোগ তুললেন রাহুল

নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর রাজনীতির অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। দশ বছর ধরে যে লোকসভা কেন্দ্রের তিনি জনপ্রতিনিধি, সেই অমেঠীর রামলীলা ময়দানে দাঁড়িয়ে এ বার আক্রমণাত্মক হলেন রাহুল।

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩১

নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর রাজনীতির অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। দশ বছর ধরে যে লোকসভা কেন্দ্রের তিনি জনপ্রতিনিধি, সেই অমেঠীর রামলীলা ময়দানে দাঁড়িয়ে এ বার আক্রমণাত্মক হলেন রাহুল।

আজ উত্তরপ্রদেশের চতুর্থ দফার ভোটপর্বে ১২টি জেলার ৫৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে যখন ভোটগ্রহণ চলছে, তখন অমেঠী বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতির অভিযোগ তুলে মোদীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন রাহুল। প্রথম তিন দফার ভোটে হারের আশঙ্কা থেকে বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতিতে ফিরে গিয়েছে। কবরস্থান থেকে কসাব প্রসঙ্গ টেনে এনে বিজেপি প্রচারের ধারা বদলেছে। কংগ্রেস প্রথমে সে সব কথাকে অবজ্ঞা করেছিল। আজ রাহুল সেই কৌশলকে একটু বদলালেন। রাহুল উন্নয়নের কথা বলেছেন। সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় না দেওয়ার কথা বলেছেন, কিন্তু আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য করেছেন মোদীকে। জনপ্রিয় হিন্দি ছবির গানের লাইন শুনিয়ে রাহুল বলেন, ‘তু হিন্দু বনেগা না মুসলমান বনেগা। ইনসান কি আওলাদ হ্যায় ইনসান বনেগা।’ রাহুলের মন্তব্য, ‘‘মোদীজি আসলে ভোটে হেরে গিয়েছেন। তাই তিনি এখন ঘৃণার রাজনীতি করেছেন। কিন্তু এতে কোনও লাভ হবে না। উত্তরপ্রদেশের দেওয়ালের লেখা স্পষ্ট। এ রাজ্যে কংগ্রেস আর সমাজবাদী দলের জোট সরকার গড়বে।’’

আরও পড়ুন: দেশের জন্য খাটি গাধার মতো, দাবি প্রধানমন্ত্রীর

আজ অমেঠীর জনসভার বক্তৃতা নানাদিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত এখানে এসেও রাহুল কিন্তু অমেঠী নিয়ে কোনও কথা বলেননি। তিনি বলেছেন মোদীর রাজনীতি ও সামগ্রিক জাতীয় প্রেক্ষাপটে উত্তরপ্রদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক করা নিয়ে। অমেঠী লোকসভার আওতায় চারটি বিধানসভা কেন্দ্র— গৌরীগঞ্জ, জগদীশপুর, তিলোওই, অমেঠী। এর মধ্যে এই অমেঠী বিধানসভা কেন্দ্রে রাজ্যসভার সদস্য সঞ্জয় সিংহের দ্বিতীয় স্ত্রী অমিতা সিংহ হেরে যান সমাজবাদী পার্টির গায়ত্রী প্রজাপতির কাছে। মুলায়মের অনুগ্রহে প্রজাপতি রাজ্যে মন্ত্রীও হন। বিজেপি সঞ্জয় সিংহের প্রাক্তন প্রথমা স্ত্রী গরিমা সিংহকে প্রার্থী করেছে। বিজেপির কৌশল কংগ্রেস আর সমাজবাদী পার্টির ভোট ভাগাভাগিতে যদি জিততে পারে। সেই জন্য স্মৃতি ইরানি অমেঠীতে ক্যাম্প অফিসও খুলেছেন। অমেঠীতে কোনও উন্নয়ন হচ্ছে না এই অভিযোগ তুলে স্মৃতি গ্রামবাসীদের কাছে প্রচারও চালান। গ্রামবাসীদের একাংশ আজ ঘোষণা করেছেন, তারা ভোটদানে বিরত থাকবেন। রাহুল গাঁধী জানেন যে ছোট রানি এই এলাকায় নানা কারণে জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। এই অবস্থায় আর যা-ই হোক বিজেপি জিতুক সেটা কংগ্রেস নেতৃত্ব চান না। সে জন্য রাহুল আজ অমেঠীর কথা না বলে জোটের কথাই বললেন।

রাহুল গাঁধী অমেঠী থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে আজও প্রস্তুত নন। অতীতে রাজীব গাঁধীর সময় থেকে এই বিতর্ক বারবার দেখা দিয়েছে যে কংগ্রেস কোন ভোট ব্যাঙ্ককে লালনপালন করবে— মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক না হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক। শাহ বাণু মামলা থেকে রামমন্দিরের শিলান্যাস এ সব বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যেও টানাপড়েন ছিল। মুলায়ম সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে রাজনীতি করেছেন। বিজেপি হিন্দুত্ব নিয়ে রাজনীতি করেছে। তাতে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের আমও গিয়েছে, ছালাও গিয়েছে— এমনটাই মনে করেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। রাহুল গাঁধী আজ বুঝিয়ে দিলেন একবিংশ শতাব্দীর যুব প্রতিনিধি হিসেবে তিনি এই ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি আর করতে চাইছেন না। এখনও তিন দফার ভোট বাকি। ভোট হবে ২৭শে ফ্রেব্রুয়ারি, ৪ মার্চ, ৮ মার্চে। অমেঠীর রামলীলা ময়দান থেকে আজ গোটা দেশের মানুষের কাছে রাহুল গাঁধী জানালেন, মানুষকে ভাগ করার রাজনীতি তিনি করবেন না। আসলে ‘‘তুমি হিন্দুও নও, মুসলিম নও, তুমি মানুষের সন্তান এবং তুমি শৈশব থেকে বড় হয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ মানুষই হবে।’’ রাহুলের ঘোষণা, ‘ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে এটাই আমার বার্তা।’ অমেঠী থেকে শুধু উত্তরপ্রদেশের ভোটের বার্তাই নয়, সম্ভবত ২০১৯-এর বার্তাও দিলেন রাহুল।

আর একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হল, অমেঠী-রায়বরেলীতেও সনিয়া গাঁধী নিজে এলেন না। তিনি ভিডিও-র মাধ্যমে রায়বরেলীর মানুষের কাছে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার কথা বলছেন। সেই বক্তব্য অমেঠীতে বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করা হচ্ছে।

Rahul Gandhi Narendra Modi Amethi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy