Advertisement
০৭ মে ২০২৪

এ রাজ্যে জমি তৈরির আরও কর্মী চান মোদী

পশ্চিমবঙ্গে আরও অনেক একনিষ্ঠ বিজেপি কর্মী চান নরেন্দ্র মোদী। এমন কর্মী যাঁরা বিজেপির ভাবধারার সঙ্গে ভাল রকম পরিচিত এবং এই রাজ্যে দলকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে মাটি কামড়ে লড়াই চালাতে পারবেন।

বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মোদী। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে মোদী। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৬ ০৪:০২
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে আরও অনেক একনিষ্ঠ বিজেপি কর্মী চান নরেন্দ্র মোদী। এমন কর্মী যাঁরা বিজেপির ভাবধারার সঙ্গে ভাল রকম পরিচিত এবং এই রাজ্যে দলকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে মাটি কামড়ে লড়াই চালাতে পারবেন।

রাজ্যে ভোটের প্রচার এখন তুঙ্গে। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রচারও শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। এমন একটা সময়ে কেন এই সংগঠন বাড়ানোর ডাক! এর কারণটাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন মোদীর সেনাপতি অরুণ জেটলি। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের প্রথম দিনে দলের সভাপতি অমিত শাহ গত কাল কংগ্রেস ও বামেদের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি। ওই বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে জেটলি কার্যত আজ স্বীকার করে নিয়েছেন, এই দফায় পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখলের প্রশ্ন নেই। এমনকী নির্ণায়ক শক্তি হিসেবে উঠে আসারও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তাই বিজেপির ভাবধারার আরও প্রচার ও ভোটের শতাংশ যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেওয়াই লক্ষ্য এখন দলের। বৈঠকের পর জেটলি বলেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে গত বারই প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা বাড়িয়েছে দল। এ বারে তা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করব।’’

কিন্তু তা করতে হলেও সংগঠনের ভিত যতটা মজবুত হওয়ার দরকার সেটা নেই। বৈঠকে আজ পশ্চিমবঙ্গে দলের সর্বশেষ হাল নিয়ে রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ যে সবিস্তার রিপোর্ট পেশ করেছেন তাতেও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বিষয়টি। বিজেপি সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী তাঁর কিছু সতীর্থকে বলেছেন পশ্চিমবঙ্গে সংগঠনকে মজবুত করার জন্য আরও ‘ডেডিকেটেড’ কর্মী প্রয়োজন। যাতে পরের লোকসভা ভোটের আগে সাংগঠনিক দিক থেকে বিজেপি আরও প্রস্তুত থাকতে পারে।

দলের জাতীয় কর্মসমিতির দু’দিনের বৈঠকের শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও ফুটে উঠেছে সংগঠনকে মজবুত করার দাওয়াই। তিনি বলেছেন, গত বছর সংগঠনের প্রসার হয়েছে। বিজেপির প্রায় ১১ কোটি সদস্য হয়েছে। কিন্তু এই সদস্যদের ‘ভিতরের শক্তি’কে ব্যবহার করে দলকে আরও মজবুত করতে হবে। সরকার গ্রাম ও গরিবদের জন্য যে সব প্রকল্প ঘোষণা করেছে, সেগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। আর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বিজেপি সভাপতি অমিত আজ ঘোষণা করেন, ১৪ এপ্রিল থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘গ্রাম উদয় থেকে ভারত উদয়’ কর্মসূচি নেওয়া হবে। ১৪ এপ্রিল বি আর অম্বেডকরের জন্মদিবসে মোদী নিজে যাবেন তাঁর জন্মস্থল মউতে। এর পর সব গ্রাম পঞ্চায়েতে কৃষকসভা, গ্রামসভা হবে। ২৪ এপ্রিল মোদী নিজেও জামশেদপুরে এমন একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

এই কর্মসূচির পিছনে বিজেপির লক্ষ্য মূলত দু’টি।
• কেন্দ্রে মোদী সরকার গ্রাম ও গরিবদের জন্য যে কর্মসূচি নিচ্ছে, সেগুলির কথা ও সুবিধা গ্রাম পর্যন্ত সরাসরি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা। যাতে এর মাধ্যমে সংগঠনকে আরও মজবুত করা যায়।
• বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে দলিত-বিরোধী তকমা দেওয়ার যে চেষ্টা চলছে তার মোকাবিলা করা।

যে কারণে মোদী আজ বলেন, ‘‘সংগঠন হওয়া উচিত বট গাছের মতো। যার শিকড় থাকা উচিত গভীরে। আর শাখা-প্রশাখা ছায়া দেবে মানুষকে। এই গাছ স্থায়ী ও চিরস্থায়ী হওয়া উচিত।’’ বিজেপির এক নেতার কথায়, আসলে প্রধানমন্ত্রী এখন দু’টি বড় চ্যালেঞ্জের সামনে।

• গত লোকসভায় মনমোহন সিংহ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করে মোদী যে হাওয়া তুলেছিলেন, এখন তা স্তিমিত। কেন্দ্রে প্রকল্প ঘোষণা হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। আগামী দিনগুলিতেও তা করে ওঠা না গেলে পরের লোকসভা ভোটে ভাল ফল করে ক্ষমতায় ফিরে আসা কঠিন হবে।
• প্রধানমন্ত্রী মুখে উন্নয়নের কথা বললেও বিরোধীরা তার বাস্তবায়ন ঠেকাতে তৎপর। প্রধানমন্ত্রী তাই আজ দলের নেতাদের সতর্ক করে বলেন, ‘‘বিরোধীদের ওই চেষ্টা ভেস্তে দিয়ে নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে। মহাত্মা গাঁধী যেমন বিভিন্ন সামাজিক কাজের মাধ্যমে জনসমর্থন ধরে রেখেছিলেন, সেই ভাবে এগোতে হবে আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Modi prepare state workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE