দেরি না করে এ বার ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ নিয়োগের কাজ দ্রুত সেরে ফেলতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সরকারি সূত্রের খবর, এ বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নোট চলে গিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির কাছে। ওই নোট নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’-এর পদ তৈরি হলে তিনিই হবেন সামরিক বাহিনী থেকে প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র উপদেষ্টা। এখন সেনা, বায়ুসেনা ও নৌসেনার তিন জন প্রধান রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মতভেদ হলে, কার মত অনুযায়ী কাজ হবে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সরকার মনে করছে, ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’-এর পদ তৈরি হলে তিন বাহিনীর মধ্যে অদৃশ্য দেওয়াল ভাঙবে। প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের জন্য নির্দিষ্ট এক জন সামরিক উপদেষ্টা তৈরির পরিকল্পনা অবশ্য নতুন নয়। কার্গিল যুদ্ধের পরে কে সুব্রহ্মণ্যম কমিটি এ নিয়ে সুপারিশ করে। সুব্রহ্মণ্যম কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে মন্ত্রিগোষ্ঠীর রিপোর্টেও এর পক্ষে সওয়াল করা হয়। কিন্তু নরেশ চন্দ্র কমিটি ২০১২-তে সুপারিশ করে, তিন প্রধানকে নিয়ে তৈরি ‘চিফ অব স্টাফ কমিটি’-র স্থায়ী চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হোক। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও স্থায়ী চেয়ারম্যানের সঙ্গে বাকি দু’জনের মতভেদ হলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে স্থির করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন।
সমর্থন কমছে শশিকলার, পাল্লা ক্রমশই ভারী হচ্ছে পনীরের
সামরিক বিশেষজ্ঞদের যুক্তি, একমাত্র ভারতেই সামরিক অভিযান নিয়ে শেষ কথা বলার ক্ষমতা প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আমলাদের হাতে রয়েছে। আমলারা তিন বাহিনীর মধ্যে বিবাদ উস্কে দিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখেন বলে বহু বার অভিযোগ উঠেছে। এই কারণেই ১৯৬৫, ১৯৭১ বা কার্গিল যুদ্ধের সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়েছিল বলে মনে করেন অনেকেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আমলাদের পাল্টা যুক্তি, এই ধরনের পদ তৈরি হলে এক জনের হাতেই সব ক্ষমতা এসে যাবে। এই কারণেই আমেরিকায় সম্প্রতি ‘জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ’-এর ক্ষমতা কমানো হয়েছে। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জি ডি বক্সির বক্তব্য, ‘‘পাকিস্তান ও চিনে জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ বা সমতুল পদ রয়েছে। আমেরিকাও সামরিক কর্তাদের বিরোধিতা উপেক্ষা করে এই পদ তৈরি করেছিল।’’
সম্প্রতি ইস্টার্ন কম্যান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রবীণ বক্সিকে টপকে বিপিন রাওয়ত সেনাপ্রধান হন। সরকারি সূত্রে খবর, তার পরে প্রবীণ বক্সিই প্রথম ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’ হবেন বলে জল্পনা শুরু হয়। কিন্তু নোট বাতিল নিয়ে মোদী সরকার ব্যস্ত থাকায় সিদ্ধান্ত হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy