সন্তানের দেখাশোনার জন্য পরিচারিকাকে নিয়োগ করা মানেই মা ‘যত্নশীল নন’, এটা বলা যায় না। এই কারণে সন্তানকে নিজের কাছে রাখার মায়ের অধিকারও খর্ব করা যায় না। একটি মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল বম্বে হাই কোর্ট। বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চেয়ে এবং পারিবারিক আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা। তাঁর যুক্তি খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
সন্তানের হেফাজত চেয়ে প্রথমে আদালতে গিয়েছিলেন শিশুর মা। ২০২৩ সালের জুন মাসে জন্ম ওই শিশুর। বিবাহবিচ্ছেদের পর সন্তানকে স্থায়ী ভাবে নিজের কাছে রাখতে চেয়ে পারিবারিক আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। পরে ওই মামলায় অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয় আদালত। ২০২৪ সালে মাকে শিশুর অন্তর্বর্তী হেফাজত দেওয়া হয়। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে বম্বে হাই কোর্টে যান শিশুর বাবা। তিনি আদালতে জানান, শিশুর দেখাশোনার জন্য পরিচারিকা নিয়োগ করেছেন তাঁর মা। আদৌ নিজে শিশুকে সময় দিচ্ছেন না। সন্তান জন্মের পর মহিলার মানসিক স্বাস্থ্যও শিশুর হেফাজতের পক্ষে উপযুক্ত নয় বলে আদালতে জানান বাবা।
আরও পড়ুন:
বম্বে হাই কোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছে। বিচারপতি আরএম জোশী বাবার যুক্তি খারিজ করে দিয়েছেন। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘মা যদি সন্তানের দেখাশোনার জন্য পরিচারিকা নিয়োগ করেও থাকেন, সেটা তো অস্বাভাবিক কিছু নয়। বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে তার খেয়াল রাখার জন্য পরিচারিকা নিয়োগ করা হয়েই থাকে। যে যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তা সত্যি বলে মেনে নিলেও মায়ের হেফাজত থেকে শিশুকে এই যুক্তিতে সরিয়ে দেওয়া যাবে না।’’ আদালত আরও জানিয়েছে, মায়ের কাছে থাকলে শিশুর ক্ষতির সম্ভাবনা আছে, এমন কোনও প্রমাণও দেখাতে পারেননি বাবা।
মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে আদালতের পর্যবেক্ষণ, সন্তানের জন্মের পর মায়েদের অবসাদ, উদ্বেগ খুবই সাধারণ বিষয়। এর মানে মা শিশুর দায়িত্ব নিতে অক্ষম, কখনওই সেটা বলা যায় না। পারিবারিক আদালতের পর্যবেক্ষণগুলি ভুল নয়, জানিয়েছে হাই কোর্ট। সন্তানের দেখভাল করতে যে তিনি সক্ষম, সেই বক্তব্যের সপক্ষে মা নিজের মেডিক্যাল শংসাপত্রও আদালতে জমা দিয়েছেন। ফলে পারিবারিক আদালতের নির্দেশই বহাল রেখেছে উচ্চ আদালত।