মুখ্যমন্ত্রী-সহ গোটা মন্ত্রিসভার পদত্যাগ দাবি করে নাগাল্যান্ডে আন্দোলন চরমে উঠেছে। গত কাল রাজ্য সরকার চলতি নগর পরিষদের নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করেছে। পুলিশের গুলিতে দুই আন্দোলনকারীর মৃত্যুর প্রেক্ষিতে উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে ডিমাপুরের পুলিশ কমিশনার ও এক ডেপুটি কমিশনারকে অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির কিছু মাত্র উন্নতি হয়নি।
নগর পরিষদ নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নাগাল্যান্ড সরকার। কার্যত এই সিদ্ধান্তকে ঘিরেই উপজাতি সংগঠনগুলির বিক্ষোভের শুরু। প্রথমে সরকার সিদ্ধান্তে অটল থাকলেও পরে ভোট স্থগিত করা হয়। শুরু হয় আলোচনা শেষ পর্যন্ত বাতিল করা হয় ভোট। যদিও সংরক্ষণ রদের কোনও সিদ্ধান্ত সরকার নেয়নি। তাতেই বিক্ষোভ চরম আকার নিয়েছে। আন্দোলনকারী উপজাতি সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ পুলিশের গুলি চালনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াংয়ের পদত্যাগ দাবি করেছে। পরিস্থিতি সামলাতে বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। নামানো হয়েছে আধা-সামরিক বাহিনী।
গত রাতে কোহিমা পুরসভা ভবনে আগুন লাগায় আন্দোলনকারীরা। আগুন লাগানো হয় আরটিও দফতর, শুল্ক দফতরেও। সরু রাস্তায় দমকল পৌঁছবার আগেই বেশ কিছু গাড়ি, প্রেস ক্লাব, ডিআইপিআর-এর বাসে আগুন ধরে যায়।
শাসক দল এনপিএফের দফতরে ভাঙচুর চালানো হয়। জেলাশাসকের দফতরে আগুন লাগানোর আগেই তা অবশ্য রোখা হয়। রাজ্য তথ্য দফতর ও পুরনো সচিবালয়ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিমাপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাগানবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ডিমাপুর পুরভবন পোড়াতে গেলে স্থানীয়দের প্রতিরোধে আন্দোলনকারীরা ফিরতে বাধ্য হয়। রাতে পরিস্থিতি পুলিশের হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল বলে নাগাল্যান্ডের ডিজিপি এল এল ডংগেল স্বীকার করেছেন। প্রায় ৪০ হাজার বিক্ষোভকারীকে সামলানোর মতো পুলিশ ছিল না। পরে সর্বত্র ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বলবৎ করা হয় কার্ফু।
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী টি আর জেলিয়াং এ দিন রাজ্যপাল পদ্মনাভ আচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। রাজ্যপালের কাছে যান যৌথ মঞ্চের নেতারাও। রাজ্যপাল তাঁদের বক্তব্য বিবেচনার আশ্বাস দেন। রাজ্যে শান্তি ফেরানোর আবেদন রাখেন তিনি। বিকেলে পুলিশের গুলিতে মৃত দুই যুবকের শেষকৃত্য হয়।