চলতি বছরে নির্ধারিত সময়ের ১৬ দিন আগেই বর্ষা ঢুকেছে মহারাষ্ট্রে। একটানা বৃষ্টিতে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা দেশের বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ের। মঙ্গলবার দিনভর বৃষ্টির পর বুধবারও অবিশ্রান্ত ধারায় বৃষ্টি চলছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার মধ্য-মহারাষ্ট্রে এবং আগামী ২ জুন পর্যন্ত গোয়া ও কোঙ্কণ উপকূলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে মুম্বই শহরেও।
শুধু রবিবার রাত থেকে সোমবার বিকেলের মধ্যেই শহরের কোথাও কোথাও ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে! ভারতের আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-এর রেকর্ড বলছে, শেষবার মুম্বইয়ে মে মাসে এত বৃষ্টি হয়েছিল ১৯১৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে ১০৭ বছর আগে! সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সময়কাল মুম্বইয়ের জন্য গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বর্ষণের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। ওই ২৪ ঘণ্টায় কোলাবায় ১৬২ মিলিমিটার এবং সান্তাক্রুজ়ে ১৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে— যা ২০২১ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় তৌকতের পর থেকে আর দেখা যায়নি। চলতি বছরের মে মাসে ইতিমধ্যেই কোলাবায় ২৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। এর আগে ১৯১৮ সালের মে মাসে সেখানে ২৭৯.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। তার পর থেকে ১০৭ বছরে এত বৃষ্টি দেখেনি মুম্বই!
আরও পড়ুন:
মুম্বইয়ের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের ঠাণে, পুণে, কোলাপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। রায়গড়, রত্নগিরি, সিন্ধুদূর্গ, সাতারা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতেও ঝড়বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। একটানা ভারী বৃষ্টির জেরে রবিবার থেকেই শহরে ব্যাহত হয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। কোথাও কোথাও রেললাইনে জল জমে গিয়েছে। বেশ কিছু ট্রেন নির্ধারিত সময়ের তুলনায় দেরিতে চলছে। অন্য দিকে, শহরের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায় যান চলাচলেও বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শহরবাসীকে। কুরলা, সিওন, দাদার এবং পরেলের নিচু এলাকাগুলিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
আবহাওয়া দফতরের হিসাব অনুযায়ী, মুম্বইয়ে বর্ষা ঢোকার তারিখ ১১ জুন। ১৯৫০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, গত ৩৫ বছরে এই প্রথম বার এত দিন আগে বর্ষার আগমন ঘটেছে শহরে! ফলে জুন মাস পড়ার আগেই টানা বৃষ্টির জেরে কার্যত থমকে গিয়েছে মুম্বই।