মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে খুনে অভিযুক্ত স্ত্রী মুস্কান আইন নিয়ে পড়তে চান বলে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। স্বামীকে খুনের অভিযোগে বর্তমানে মুস্কান এবং তাঁর প্রেমিক সাহিল শুক্ল মেরঠ জেলে বন্দি।
জেল সুপার বীরেশ রাজ শর্মা জানিয়েছেন, মুস্কান গ্রেফতার হয়ে জেলে আসার পর থেকে পরিবারের কেউ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। যদিও তাঁর প্রেমিক সাহিলের ঠাকুরমা এবং ভাই দু’জনের সঙ্গেই দেখা করেছেন। বীরেশের কথায়, ‘‘জেলে স্বাভাবিক আচরণই করছেন মুস্কান। কারও সঙ্গে খুব একটা কথা বলেন না। তবে সম্প্রতি আমাদের কাছে আইন নিয়ে পড়ার আবেদন জানিয়েছেন মুস্কান। তাঁকে পড়ার অনুমতি দেওয়া যায় কি না, সেটা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। তবে যদি সত্যিই আইন নিয়ে পড়ার আগ্রহ থাকে মুস্কানের, তা হলে জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করবেন।’’
কিন্তু কেন হঠাৎ আইন নিয়ে পড়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন মুস্কান? জেল সূত্রে খবর, আইন নিয়ে পড়াশোনা করে নিজের মামলা নিজেই লড়তে চান বলে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছেন মুস্কান। জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আইন সংক্রান্ত বই এবং শিক্ষাব্যবস্থা এবং সিলেবাস সম্পর্কে জানতেও চেয়েছেন মুস্কান। জেল কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘আমি যেমনটা চাই, সে ভাবে কোনও আইনজীবীই আমার হয়ে মামলা লড়বেন না। তাই নিজেই নিজের হয়ে ওকালতি করতে চাই।’’ তবে জেল সুপার জানিয়েছেন, কোনও বন্দিকে এই ধরনের উচ্চশিক্ষা দেওয়া যায় কি না, তা বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। যদি মুস্কান আইন নিয়ে পড়তে চান, তা হলে প্রথমে স্কুলের গণ্ডি পেরোতে হবে। তার পর তিনি আইন নিয়ে পড়তে পারবেন। প্রসঙ্গত, নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন মুস্কান। জেল সূত্রে খবর, সাহিলের পরিবার তাঁর জন্য আইনজীবীর ব্যবস্থা করলেও মুস্কান কোনও আইনজীবী নেননি। সরকারি আইনজীবী তাঁর মামলা লড়ছেন। জেলের একটি সূত্রের দাবি, সরকারি আইনজীবীর কাছ থেকে ঠিকমতো সহযোগিতা পাচ্ছেন না মুস্কান। তাই তিনি নিজেই নিজের মামলা লড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মার্চ সৌরভ রাজপুতের দেহ উদ্ধার হয় ড্রামের ভিতর থেকে। তাঁকে খুন করে দেহ টুকরো করার অভিযোগ ওঠে মুস্কান এবং তাঁর প্রেমিক সাহিলের বিরুদ্ধে। সৌরভের দেহ টুকরো করার পর ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেরঠের এই হত্যাকাণ্ড শোরগোল ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে।