প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
অন্তত চারশো আসন নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য দিল্লির মসনদে বসতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী- অমিত শাহেরা। আর সেই লক্ষ্যে হিন্দুত্বের পাশাপাশি, গরিব, যুব সম্প্রদায়, কৃষক ও নারীদের সমর্থন নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। গোটা পরিকল্পনাটির নাম দেওয়া হয়েছে জি (গরিব), ওয়াই (যুব), এ (অন্নদাতা), এন (নারী) বা সংক্ষপে ‘জ্ঞান’।
গত কাল দলের রণকৌশল ঠিক করতে বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপির শীর্ষ নেতারা। সেখানে চারশো আসন ছোঁয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন দলের সভাপতি জে পি নড্ডা। পাশাপাশি, লোকসভায় দলের ভোট প্রাপ্তির হার অন্তত ৪৫ শতাংশে যাতে পৌঁছয়, সে দিকেও নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রাপ্ত ভোটের হার বাড়াতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে দেশের নারী, যুব, কৃষক ও গরিবদের বিশেষ ভাবে কাছে টানতে দলীয় কর্মীদের মাঠে নামতে নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ‘জ্ঞান’ বাস্তবায়নে গড়া হয়েছে কমিটিও। তার কাজ হবে ওই চার সমাজকে দলের ছাতার নীচে আনতে রণকৌশল তৈরি করা। প্রাথমিক ভাবে, ওই চার সমাজকে কাছে টানতে সম্মেলন ও আলোচনা সভার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘যাঁরা প্রথম বারের ভোটার— সেই তরুণ ও যুব সমাজের কাছে পৌঁছনোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। নারী বা গরিবেরা কেন্দ্র সরকারের সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। কৃষকদের ক্ষেত্রে বিমা-সার বা ফসলের সঠিক দাম পাচ্ছেন কি না, তা ঘরে ঘরে গিয়ে নিশ্চিত করতে নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে।’’
বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, গত বার ভাল ফল করা এমন তিন রাজ্যে এ যাত্রায় দলের লড়াই কঠিন। যার মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ। এর মধ্যে বিহারে পাঁচ বছর আগে নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়েছিল বিজেপি। বর্তমানে সেই জোট ভেঙে গিয়েছে। একই ভাবে মহারাষ্ট্রে পাঁচ বছর আগে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ও বিজেপি হাত ধরে লড়াই করলেও, এখন উদ্ধব বিরোধী শিবিরে। ফলে ওই দুই রাজ্যেই লড়াই বেশ কঠিন। পশ্চিমবঙ্গে গত বার ১৮টি আসন পেলেও, এ যাত্রায় বিহার ও মহারাষ্ট্রের মতো সেখানেও আসন কমার আশঙ্কা রয়েছে দলের অভ্যন্তরে। এ ছাড়া উত্তর ও পশ্চিম ভারতে নতুন করে আসন সংখ্যা বাড়ানো কঠিন বলেই মনে করছে দল। উল্টে ১০ বছরের প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতায় আসন কমার সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ণমাত্রায়।
ওই ঘাটতি মেটাতে এ যাত্রায় দক্ষিণ ভারতে আরও বেশি আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চায় পদ্ম শিবির। গত বার তেলঙ্গানায় চারটি ও কর্নাটকে ২৫টি-সব মিলিয়ে মোট ২৯টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। এখন ওই দু’রাজ্যেই ক্ষমতায় কংগ্রেস। ফলে এ বার সেখানে গতবারের মতো ফল হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে গৈরিক শিবির। এই আবহে তামিলনাড়ু, কেরলের মতো রাজ্যগুলিতে আসন জেতার লক্ষ্যে ঝাঁপানোর পরিকল্পনা করছে তারা। এক দিকে, তামিলনাড়ু ও কেরলেও বেশ কয়েকটি সরকারি প্রকল্প ঘোষণা করে আমজনতার মন জয়ের কৌশল নিয়েছেন মোদী-শাহেরা। তেমনিই তামিলনাড়ুতে নির্মলা সীতারামন ও কেরলে এস জয়শঙ্করের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে দাঁড় করিয়ে ওই দু’রাজ্যে খাতা খুলতে চাইছেন নড্ডারা। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘নির্মলা বা জয়শঙ্করের মতো শীর্ষ স্তরের কোনও মুখ লড়াইয়ে নামলে এক দিকে জয়ের সম্ভাবনা যেমন বেড়ে যায়। তেমনি এতে গোটা রাজ্যেই দলীয় কর্মীদের উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। ওই নেতারা যে আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, তার সংলগ্ন কেন্দ্রগুলিতেও ভাল ফলের সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy