এক সময়ের বিরোধী জোটে ফাটল ধরানোর অস্ত্রই এখন বিরোধী জোটের আঠা।
মুশকিলে পড়ে এখন সিবিআইকে নিয়ে সাতপাঁচ ভেবে পা ফেলতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। ইউপিএ-র আমলে এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য বিমান কেনায় দুর্নীতি নিয়ে গত দু’বছর তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। তদন্তে ইউপিএ সরকারের তৎকালীন বিমানমন্ত্রী প্রফুল্ল পটেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে বলে গত কয়েক দিন ধরেই জল্পনা তুঙ্গে। কিন্তু ‘আজ হবে, কাল হবে’ বলে শোনা গেলেও, তা এখনও হয়নি। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সিবিআইয়ের রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে বিরোধী জোট যে ভাবে এককাট্টা হয়েছে, তাতেই কি পিছু হটছে মোদী সরকার?
পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থার তদন্তে সিবিআইয়ের তৎপরতার বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গোটা বিরোধী জোট এককাট্টা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার সিবিআইকে ভোটের আগে রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। আজ লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে কর্মিবর্গ দফতর জানিয়েছে, সিবিআইতে সংস্কারের পরিকল্পনা সরকারের নেই। তার পরে সেই অভিযোগ আরও জোরদার হয়েছে। এর পরে লোকসভা ভোটের মুখে ফের কোনও বিরোধী নেতাকে সিবিআই ডেকে পাঠালে, বিরোধী জোট এককাট্টা হয়ে নতুন ভাবে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে পারে। রাজ্যে রাজ্যে বিরোধী জোট আরও মজবুত হতে পারে।
এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের সংযুক্তিকরণ ও নতুন বিমান সংস্থার জন্য ১১১টি নতুন বিমান কেনা নিয়ে ২০১৭-র জানুয়ারি থেকেই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। অভিযোগ, ৬৭টি বিমানের দরকার হলেও বোয়িং ও এয়ারবাস থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে ১১১টি বিমান কেনা হয়। সিএজি এতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পরেই প্রথমে সিবিআই, তার পর ইডি তদন্তে নামে। সেই সময়ে বিমানমন্ত্রী ছিলেন এনসিপি নেতা প্রফুল্ল পটেল। সিবিআই, ইডি-র কর্তাদের বক্তব্য, বিমানমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত নিয়েই এই সিদ্ধান্ত হয়। সম্প্রতি দুবাই থেকে কর্পোরেট দালাল দীপক তলোয়ারের প্রত্যর্পণের পরে এই তদন্তে গতি এসেছে। তলোয়ার এখন ইডি-র হেফাজতে। তিনি বিদেশি বিমান সংস্থাগুলি থেকে ২১২ কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। শুধু নতুন বিমান কেনা নয়। অন্য বিমান সংস্থাকে ফায়দা পাইয়ে দিতে বিদেশের লাভজনক রুট থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান তুলে নেওয়ার পিছনেও তাঁর ভূমিকা ছিল বলে সিবিআই-ইডির অভিযোগ।
মুশকিল হল, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল, বিজু জনতা দল, এসপি, বিএসপি নেতাদের পরে এনসিপি নেতাদের তলব করা হলে, বিরোধী জোট তার পিছনেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলবে। বলা হবে, কংগ্রেস-এনসিপি জোট মহারাষ্ট্রে বিজেপির মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে বলেই এই পদক্ষেপ। তাই ইউপিএ সরকারের বিমানমন্ত্রীকে ডাকতে গিয়েও পিছিয়ে আসছে সিবিআই? সিবিআই এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। আর বিজেপির দাবি, সিবিআই আইন মাফিক তদন্ত করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy