ফাইল চিত্র।
চাষিরা বেসরকারি সংস্থার থেকে গমের দাম বেশি পাচ্ছেন বলে সরকারকে কম কিনতে হচ্ছে। আগামী দিনে ধানের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে সরকারকে ধানও কম কিনতে হবে। এই সুবাদে চলতি অর্থ বছরে খাদ্য ভর্তুকিতে কেন্দ্রের প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে। এলআইসি বা জীবন বিমা নিগমের বিলগ্নিকরণ থেকেও প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা সরকারের ঘরে ঢুকছে। সেই সঙ্গে আয়কর ও জিএসটি-র মতো পেট্রল-ডিজ়েলের শুল্ক ছাড়া অন্যান্য কর থেকেও সরকারের যথেষ্ট আয় হচ্ছে।
এই হিসেবনিকেশ করে অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, পেট্রল-ডিজ়েলে উৎপাদন শুল্ক কমানো হলেও অর্থনীতিতে চাঙ্গা করার জন্য জরুরি পরিকাঠামোর খরচে তার ধাক্কা লাগবে না। শনিবার পেট্রলে লিটার প্রতি ৮ টাকা ও ডিজ়েলে ৬ টাকা শুল্ক কমানোর ফলে মোদী সরকারের এক বছরে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা আয় কমবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, পরিকাঠামো তৈরিতে চলতি অর্থ বছরে ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে বলে বাজেটে ধরা হয়েছিল। কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এই অর্থ খরচে সরকার বদ্ধপরিকর। কোনও কাটছাঁট হবে না।
আয় কমলেও খরচ কীভাবে একই থাকবে? অর্থ মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, চলতি অর্থ বছরের পৌনে দু’মাস পেরিয়ে গিয়েছে। তেলে শুল্ক ছাঁটাইয়ের ফলে এ বছর ৮৫ থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হবে। সেই সঙ্গে উজ্জ্বলা যোজনায় রান্নার গ্যাসে ২০০ টাকা ভর্তুকি দিতে খুব বেশি হলে ৬,১০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। উল্টোদিকে সরকার এ বছর রবি মরসুমে ১০০ লক্ষ টন গম কম কিনবে। ১ অক্টোবর থেকে ধান কেনা শুরু হলে সেখানেও ১০০ লক্ষ টন ধান কম কেনা হবে। কারণ, গমের মতোই ধানের ক্ষেত্রেও বাজারে দাম বেশি মিলবে বলে চাষিরা ব্যবসায়ীদেরই ধান বেচবেন। ফলে খাদ্য ভর্তুকিতে ৬০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। সেই সঙ্গে এলআইসি থেকে বাজেটের হিসাব বহির্ভূত ২০ হাজার কোটি টাকা আসায় সরকারের হাতে ৮০ হাজার কোটি টাকা থাকছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় বিনামূল্যে রেশন দিতে ঠিক এই ৮০ হাজার কোটি টাকাই বাড়তি খরচ হবে। তবে একমাত্র চিন্তার কারণ হল, সারের ভর্তুকি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে দাম বেড়ে যাওয়ায় সারে ১.১ লক্ষ কোটি টাকা বাড়তি ভর্তুকি দিতে হবে। কিন্তু চলতি বছরে সরকারের বাজেটে হিসাব অতিরিক্ত ১.৭ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হতে পারে। এইসব হিসাব করেই পেট্রল-ডিজ়েলে গত নভেম্বরের পরে দ্বিতীয় দফায় শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রয়োজনে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাড়তি ঋণ নিতে হতে পারে। কিন্তু তেলের শুল্ক কমানোয় ১ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বলে সেই পরিমাণ অর্থই ধার করতে হবে, এমন নয়। বাজে খরচ কাটছাঁটের চেষ্টা হবে। রাজকোষ ঘাটতি ৬.৪ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গেলেও খুব বেশি পরিমাণে লক্ষ্যচ্যুত হতে হবে না।’’
এপ্রিল মাসে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.৭৯ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। তেলের দাম কমিয়ে জুন মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার অন্তত ০.২ শতাংশ অঙ্ক কমবে বলেসরকারের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy