পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে আগামী ১৬ জানুয়ারি তলব করেছে জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন। ওই দিন সকাল ১১টায় কমিশনের চেয়ারম্যানের সামনে তাঁকে অবশ্যই হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার মোট ১৭৯টি ওবিসি সম্প্রদায়কে রাজ্যের তালিকাভুক্ত করেছে। তাদের মধ্যে ১১৮টিই মুসলিম। মুখ্যসচিব আজ পর্যন্ত দেখাতে পারেননি, হিন্দু ধর্ম ছেড়ে মুসলিম হয়ে কত জন অনগ্রসর শ্রেণির সুফল ভোগ করছেন। কমিশন মনে করছে, পশ্চিমবঙ্গে ‘মূল হিন্দু’ এবং অন্য অনগ্রসর জাতিগুলির সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারও এখানে নজর দিচ্ছে না। বিষয়টি গুরুতর, তাই প্রয়োজনীয় যাবতীয় তথ্য-সহ মুখ্যসচিবকে তলব করা হচ্ছে।
এই কমিশন গত অক্টোবরেও পশ্চিমবঙ্গকে নোটিস পাঠিয়ে ধর্মান্তরিত হিন্দুদের কুলুজি বা বংশবৃত্তান্তের নথি তলব করেছিল। তাদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে অনগ্রসর শ্রেণিগুলিকে অতিরিক্ত অনগ্রসর (ক্যাটেগরি-এ) এবং অনগ্রসর (ক্যাটেগরি-বি)— এই দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমটির অন্তর্গত ৮১টি জাতির মধ্যে ৭৩টি জাতি মুসলিম এবং দ্বিতীয়টিতে থাকা ৯৮টি জাতির মধ্যে ৪৫টি মুসলিম। পশ্চিমবঙ্গে তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য যথাক্রমে ২২ শতাংশ, ৬ শতাংশ এবং ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। মণ্ডল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন ওবিসি-দের সংরক্ষণ বাড়িয়ে ২২ শতাংশ করার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার গত ১৪ এপ্রিল জানায়, এ বিষয়ে তারা কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।গত ২৩ নভেম্বরের শুনানিতেও পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা বলেছিলেন, রাজ্যের কোন ওবিসি সম্প্রদায়গুলি হিন্দু থেকে মুসলিম হয়েছে, তার কোনও তালিকা নেই। কিন্তু অতীতে রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কমিশনের দেওয়া পরামর্শেই এই ধর্মান্তরণের উল্লেখ ছিল বলে জাতীয় অনগ্রসর শ্রেণি কমিশনের দাবি।
চলতি বছরের গোড়ায় এই কমিশনের চেয়ারম্যান তথা বিজেপি নেতা হংসরাজ আহির অভিযোগ তোলেন, পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমরাই ওবিসি সংরক্ষণের যাবতীয় সুবিধা পাচ্ছেন। বিজেপির মুসলিম তোষণের অভিযোগে রাজ্য পাল্টা বলেছিল, সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশি মানেই যে জনসংখ্যার জোর বেশি, এমন নয়। বিজেপি মেরুকরণের রাজনীতি চায় বলেই এমন প্রচার করছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)