Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চ্যানেল কর্তার বাড়িতে সিবিআই হানায় বিতর্ক

এনডিটিভি কর্তৃপক্ষের অবশ্য অভিযোগ, সিবিআই গোয়েন্দারা আজ তাঁদের দফতরেও হানা দেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘পুরনো কিছু ভুয়ো অভিযোগের’ ভিত্তিতে পরিকল্পিত ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁদের।

প্রণয় রায়

প্রণয় রায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

খবরের চ্যানেল এনডিটিভি-র প্রতিষ্ঠাতা-সাংবাদিক প্রণয় রায়ের দিল্লির বাড়িতে আজ তল্লাশি চালাল সিবিআই। অভিযোগ, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের কিছু কর্মীর সঙ্গে যোগসাজশ করে সুদ কমিয়ে ব্যাঙ্কের ৪৮ কোটি টাকা ক্ষতি করেছেন তিনি। প্রণয়, তাঁর স্ত্রী রাধিকা, আরআরপিআর হোল্ডিং প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থা এবং আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের কিছু কর্তার বিরুদ্ধে ক’দিন আগেই এফআইআর করেছে সিবিআই। সেই সূত্রে তল্লাশি হয়েছে দিল্লি ও দেহরাদূনের আরও তিনটি জায়গাতেও।

এনডিটিভি কর্তৃপক্ষের অবশ্য অভিযোগ, সিবিআই গোয়েন্দারা আজ তাঁদের দফতরেও হানা দেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘পুরনো কিছু ভুয়ো অভিযোগের’ ভিত্তিতে পরিকল্পিত ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁদের।

সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, প্রণয় ও রাধিকা এনডিটিভি-র হোল্ডিং সংস্থা আরআরপিআর-এর মালিক। অভিযোগ, ২০০৮ সালে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক থেকে ১৯% সুদে ৩৭৫ কোটি টাকা ঋণ নেয় সংস্থাটি। কিন্তু বছরখানেক পরে সুদের হার ১০% কমিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে ব্যাঙ্কের ক্ষতি হয় ৪৮ কোটি টাকা। আরও অভিযোগ, ঋণ নেওয়ার সময়ে এনডিটিভি-র ৬১% ভোটিং শেয়ার বন্ধক রাখা হয়েছিল। অথচ সেবি, স্টক এক্সচেঞ্জ এবং তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রককে তা জানানো হয়নি।

প্রণয়ের সংস্থার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন আর্থিক গরমিলের অভিযোগের তদন্ত করছিল আয়কর দফতর এবং ইডি। কিন্তু সরাসরি অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ কোনও সংস্থাকে দিয়ে তল্লাশি চালাতে রাজি ছিলেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। প্রণয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল। তাই প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকা সিবিআই সক্রিয় হয় বলে খবর।

আরও পড়ুন: বিচ্ছিন্ন রইলেন বিচ্ছিন্নতাকামীরা

এনডিটিভি-র বক্তব্য, একাধিক তদন্তকারী সংস্থার এই ‘মরিয়া হয়ে পিছনে লাগা’-র (উইচ হান্টিং) বিরুদ্ধে তাদের লড়াই চলবে। ব্যাঙ্কের চিঠি দেখিয়ে তাদের দাবি, পুরো ঋণই মেটানো হয়েছে। চ্যানেলটির অভিযোগ, ‘এনডিটিভি-র নির্ভীক ও স্বাধীন মনোভাব হজম হচ্ছিল না শাসক দলের নেতাদের।’ এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে এডিটরস গিল্ড অব ইন্ডিয়া। বলেছে, ‘কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধের যে কোনও প্রচেষ্টার নিন্দা করছি আমরা। সিবিআই যেন আইনের পথে চলে।’

দিন কয়েক আগে এনডিটিভি-র এক অনুষ্ঠানে অ্যাঙ্কর নিধি রাজদানের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। শেষ পর্যন্ত নিধির নির্দেশে অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে যান সম্বিত। ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। দিল্লির রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, সেই ঘটনার সঙ্গে কি কোনও যোগ রয়েছে এ দিনের সিবিআই হানার? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, ‘‘দু’টির মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। আইন আইনের পথে চলবে।’’ কিন্তু এই কথা মানতে নারাজ বিরোধীরা। নিন্দায় সরব কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে লিখেছেন, ‘স্তম্ভিত হলাম। এ এক উদ্বেগজনক প্রবণতা।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE