E-Paper

হাসিনা-ফেরতের চিঠিতে হেলদোল নেই ভারতের

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে ঘরোয়া ভাবে জানানো হয়েছে, ওই চিঠি নিয়েএখনও সরকারের ভিতরে কোনও ভাবনাচিন্তা করা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৭
শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে ফের চিঠি পাঠাল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তিকালীন সরকার। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক মন্ত্রক শুক্রবারই ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনে সংক্ষিপ্ত চিঠি পৌঁছে দিয়েছে। নয়াদিল্লি সরকারি ভাবে এখনও পর্যন্ত এই চিঠি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।

বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে ঘরোয়া ভাবে জানানো হয়েছে, ওই চিঠি নিয়েএখনও সরকারের ভিতরে কোনও ভাবনাচিন্তা করা হয়নি। গণতান্ত্রিক ভাবে জিতে না আসা, কোনও অন্তর্বর্তিকালীন সরকার অন্য রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের কাছে কোনও রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, তার সমস্ত আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন— এমনটাই অবস্থান সাউথ ব্লকের। ফলে এখনই বাংলাদেশের চিঠির জবাব দেওয়ার জন্য তোড়জোড় করা হচ্ছে না বলেই কূটনৈতিক সূত্রের খবর। কবে দেওয়া হবে বা এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হবে কি না, তা নিয়েও কোনও কথা বলেনি বিদেশ মন্ত্রক।

গত বছরের অগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই শেখ হাসিনা ভারতে রয়েছেন। সম্প্রতি ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময়ে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এই রায়ের পরে তাঁকে ফেরানোর জন্য ভারতকে এই নতুন চিঠি পাঠানো হল।

এর আগেও বাংলাদেশ কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছিল, যদিও ভারত সরকারের তরফে কেবল প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়েছিল, সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয়নি।এই আবহে গত কাল সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টামহম্মদ তৌহিদ হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুক্রবার চিঠি পাঠিয়েছি। এটি দ্বিতীয় অনুরোধ। গত বছরের ডিসেম্বরেও বিদেশ মন্ত্রক ভারতের বিদেশ মন্ত্রককে হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য একটি চিঠি পাঠিয়েছিল। তবে কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।’’

ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। হাসিনার জমানাতেই ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, আদালতের রায়ে প্রত্যর্পণ করানোর মতো অপরাধ করে থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এক দেশ অন্য দেশের হাতে তুলে দেবে। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়মও রয়েছে। চুক্তিতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, অপরাধটির চরিত্র যদি রাজনৈতিক হয়, তা হলে প্রত্যর্পণ করা হবে না। পাশাপাশি, খুন, গুম করা এবং অত্যাচার (যেগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটিতে হাসিনা অভিযুক্ত) রাজনৈতিক অপরাধের তালিকায় রাখা হবে না বলেও চুক্তিতে বলা হয়েছে।

চুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, সেখানে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে যে, বিচারের নেপথ্যে যদি সৎ কোনও উদ্দেশ্য না-থাকে, তা হলে ভারত বা বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ করবে না। হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনালের রায়ের পরে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বিদেশ মন্ত্রক। তাতে স্পষ্ট জানানো হয়, ভারত সব সময়ে বাংলাদেশের মানুষের শান্তি, গণতন্ত্র, সবাইকে নিয়ে চলা ও স্থিতিশীলতার প্রশ্নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সমস্ত অংশীদারের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করতেচায় নয়াদিল্লি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy