হাফিজ সইদের নেতৃত্বাধীন জামাত-উদ-দাওয়া তার সক্রিয়তা এবং সংগঠন বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের মাটিতে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর সূত্রে এ খবর পাওয়া গিয়েছে। আশঙ্কা, বাংলাদেশের সীমান্ত পার করে মৌলবাদী চিন্তাভাবনা এবং আন্তঃসীমান্ত চরমপন্থার আমদানি বাড়তে পারে ভারতে। এটাও মাথায় রাখা হচ্ছে পাকিস্তানের আইএসআই বাংলাদেশে নিজের পুনর্জাগরণ ঘটাচ্ছে।
এই আশঙ্কা আরও বেড়েছে পাকিস্তানের মারকাজি জামিয়াত আহলে হাদিসের মহাসচিব ইবতিসাম ইলাহি জাহিরের বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে। তিনি জঙ্গি সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীও বটে। জাহিরের সফরকে ঘিরে ভারতের সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে গোয়েন্দাদের।
জাহির ইতিমধ্যে রাজশাহির নাচোল-সহ সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকার মসজিদে বক্তৃতা দিয়েছেন এবং রাজশাহিতে আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আসাদুল্লাহ আল গালিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারি, জয়পুরহাট ও নওগাঁ সফর করছেন তিনি। ৬ ও ৭ নভেম্বর রাজশাহির পোবার দাঙ্গিপাড়ায় সালাফি সম্মেলনে বক্তৃতা দেওয়ার পর ৮ নভেম্বর তাঁর পাকিস্তান ফেরার কথা। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা তিনি ঘুরবেন বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, মুহাম্মদ ইউনূসের আমলে এটি জাহিরের দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর।
২০০১ থেকে ২০০৬— এই কালখণ্ডের মধ্যে বাংলাদেশে যে সন্ত্রাসবাদী সেলগুলি তৈরি হয়েছিল সেগুলি আবার জেগে উঠছে, এমন সব চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। যা সাউথ ব্লকের উদ্বেগের কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের মাটিতে বেশ কিছু সন্ত্রাসবাদী হামলার সূত্রে পাওয়া গিয়েছিল ঢাকার সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক-এ, যেখানে আইএসআই এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যক্ষ মদত ও পুঁজি ছিল। ওই সময়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আলফা-সহ বেশ কিছু চরমপন্থী নেতা ছিল বাংলাদেশে, আইএসআই এবং তৎকালীন বিএনপি–জামায়াতে সরকারের আশ্রয়ে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ভারত-বিরোধী চরমপন্থী সংস্থাগুলিকে রীতিমতো লালন পালন করেছে। সেই পরিস্থিতি আবার তৈরি হয় কিনা, সে দিকে সতর্ক নজর রাখতে চাইছে সাউথ ব্লক।
ব্রিটেনে ইলাহি জাহিরের বিতর্কিত ও উস্কানিমূলক বক্তৃতাগুলির জন্য প্রবেশ নিষেধের দাবি উঠেছে চ্যারিটি কমিশনের পক্ষ থেকে। তাঁর এই সফর বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সখ্যের পরিণতি হিসেবেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। সে দেশের সেনা কর্তা, বাণিজ্য এবং শক্তি মন্ত্রকের শীর্ষ মন্ত্রীরা নিয়মিত বাংলাদেশ সফর করছেন। কুড়ি বছর পর পাকিস্তান বাংলাদেশের যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক বসেছে গত সপ্তাহে। তাতে একগুচ্ছ সমন্বয়ের চুক্তিপত্র সই হয়েছে।
৩ আসনে খালেদা
সংবাদ সংস্থার খবর, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। সেই নির্বাচনে মোট তিনটি আসন থেকে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি-র চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। সোমবার বিকেলে ঢাকার গুলশনে বিএনপি-র রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন।
মোট ২৩৭টি আসনের জন্য এ দিন প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। জানানো হয়েছে, ফেনী-০১, বগুড়া-০৭ এবং দিনাজপুর-০৩ আসন থেকে লড়বেন খালেদা জিয়া। তাঁর ছেলে তথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লড়তে চলেছেন বগুড়া-০৬ আসন থেকে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঠাকুরগাঁও-০১ আসন থেকে লড়বেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)