শিলচরে আধুনিক মাছের বাজারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানেই ক্ষোভ প্রকাশ করল বিজেপি। কারণ, বাজারের নাম-ফলকে নবনিযুক্ত পুরপ্রধানের নাম নেই। অনুষ্ঠান মঞ্চে তখন হাজির রাজ্যের দুই মন্ত্রী, স্থানীয় সাংসদ। বিভাগীয় মন্ত্রী দুঃখপ্রকাশ করে বিজেপি পুরসদস্যদের শান্ত করেন।
মৎস্যমন্ত্রী বসন্ত দাস জানান, নতুন ভাবে বাজারটিকে সাজানো হয়েছে। খরচ হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। ৯০ শতাংশ কেন্দ্রের কাছ থেকে মিলেছে। ১০ শতাংশ পুরসভা দেবে। তবে, তা এখনও মেলেনি। কাজ কিছুটা বাকি রয়েছে। প্রস্তর ফলকের আবরণ উন্মোচন করে মাছ বাজারের উদ্বোধন করেন বসন্তবাবু।
ওই সময়ই উঠে দাঁড়ান বিজেপি সদস্যরা। ফলকে মন্ত্রী বসন্ত দাস, অজিত সিংহ ও সাংসদ সুস্মিতা দেবের নাম উল্লেখ করা ছিল। প্রতিবাদে সরব হয় বিজেপি। তাঁরা জানতে চান, পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুরের ফলকে নাম নেই কেনয নির্বাচিত পুরসদস্যদের সঙ্গে যোগ দেন বিজেপি যুব মোর্চার কর্মী-সমর্থকরাও।
শিলচর পুরসভার উপ-সভাপতি চামেলি পাল রাজনীতিতে নতুন এসেছেন। তিনিই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন। ১৫ মিনিট ধরে হইচই চলে। বসন্তবাবু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেন। মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে একে বড় ভুল বলে স্বীকার করেন। দুঃখপ্রকাশ করেন। জানিয়ে দেন, দ্রুত সংশোধিত ফলক বসানো হবে। সেখানে পুরসভাপতি নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুরের নাম মর্যাদার সঙ্গে উল্লেখ করা হবে। নীহারেন্দ্রবাবুর কথায় বিজেপি সদস্যরা শান্ত হন।
বসন্তবাবু বলেন, ‘‘অসমে মাছের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বাজারে ক্রেতাদের অনেক দুর্ভোগ হয়। তাই প্রতিটি জেলায় একটি করে আধুনিক মাছের বাজার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’ সাংসদ সুস্মিতা দেব দাবি করেন, তিনি সভাপতি থাকার সময় মাছের বাজারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তখনই পুরসভা ১০ শতাংশ অর্থ দিতে সম্মতি জানিয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা আর দেওয়া হয়নি। তিনি বর্তমান পুরসভাপতি নীহারেন্দ্রবাবুকে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার অনুরোধ জানান। এখন বাজার পরিচালনা এবং রাজস্ব আদায় যে পুরসভারই হাতে থাকবে, সে কথারও উল্লেখ করেন সুস্মিতাদেবী। নীহারেন্দ্রবাবু অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
বিজেপি বিধায়ক দিলীপকুমার পাল দিল্লি থেকে টেলিফোনে বলেন, ‘‘বাজারের জায়গা পুরসভার। ১০ শতাংশ টাকাও দেবে। ফলকে পুরসভাপতির নাম থাকবে না? এটা আপত্তিকর।’’
মাছের বাজারের চেনা ছবিটা বদলেছে করিমগঞ্জেও। শহরতলি টিলাবাজারে গত কাল নতুন মাঠ-বাজারের উদ্বোধন করেছেন মৎস্যমন্ত্রী। মন্ত্রী জানান, ৭৮ লক্ষ টাকা খরচে বাজারটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে নতুন ধাঁচের নিকাশি ব্যবস্থা, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বসার জায়গা রয়েছে। মাটিতে রয়েছে ‘টাইলস’। বসন্তবাবুর মন্তব্য, ‘‘অনেকে বাজার করে বাড়ি ফিরেই স্নান করেন। আমরা সেই অভ্যাসটাই বদলানোর চেষ্টা করছি।’’ রাজ্যের অন্য কয়েকটি জেলাতেও একই রকম বাজার তৈরি করা হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, চাযবাসের মুনাফা থেকে মাছের ব্যবসায় লাভ কখনও কখনও বেশিই হয়। কিন্তু অসমে মৎস্যচাষে আগ্রহ কম। তাই মাছের উৎপাদনও বেশি হয় না। রাজ্যকে ভরসা করতে হয় কানপুর, লখনউ, অন্ধ্রপ্রদেশের উপর। তা ছাড়া রাজ্যে জলাশয়ের সংখ্যা কমেছে। তাতে কমেছে মাছের উৎপাদনও। মন্ত্রী জানান, মৎস্যচাষে উৎসাহ দিতে সরকার মাছের চারা বিতরণ করছে। এই কাজে উৎসাহও দেওয়া হচ্ছে। করিমগঞ্জের ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলাশাসক সঞ্জীব গোঁহাই বরুয়া, বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, জেলা কংগ্রেস সভাপতি সতু রায়।