পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় সহযোগিতা করেছিলেন স্থানীয়দের অনেকেই। শুধু তা-ই নয়, পহেলগাঁও থেকে রাজৌরি পর্যন্ত এই বিস্তীর্ণ এলাকার অনেকেই এই হামলার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) তদন্তকারীরা। হামলার পর পরই প্রায় একশো জন স্থানীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এনআইএ সূত্রে খবর, তাঁদের মধ্যে ২০ জনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এঁরা ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ হিসাবে জঙ্গিদের হয়ে কাজ করতেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের জেরা করা হবে বলে সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর, জম্মুর কোট ভলওয়াল জেলে বন্দি লশকর জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ নিসার আহমেদ ওরফে হাজি এবং মুস্তাক হুসেনকে জেরা করতে পারে এনআইএ। এই দু’জন ২০২৩ সালে ভাটা ধুরিয়া এবং তোতাগলিতে সেনার কনভয়ে জঙ্গি হামলায় মদত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়। তদন্তকারীদের সন্দেহ, রাজৌরি, পুঞ্চ এবং পহেলগাঁওয়ে হামলার যোগসূত্র থাকতে পারে। ওই হামলায় জড়িত জঙ্গিরাই কি পহেলগাঁওয়ে হত্যালীলা চালিয়েছে, সেই সূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারীদের সন্দেহ, পহেলগাঁওয়ের হামলাকারীরা গত ১০ দিন ধরে পাহাড়ি গুহায় আত্মগোপন করে রয়েছে। তবে এত দিন ধরে জঙ্গলে এবং পাহাড়ি গুহায় থাকার জন্য যে রসদ দরকার, সেই রসদ কারা জোগাচ্ছে, সন্দেহভাজন ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’দের জেরা করে তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। জঙ্গিদের খোঁজে তাই বৈসরন, তারুন হপন্তগুন্ড, ডাবরু এবং আশপাশের এলাকাগুলিতে চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, এই এলাকাগুলির মধ্যেই জঙ্গিরা আত্মগোপন করে থাকতে পারে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, বৈসরন উপত্যকা এবং তার ২০ কিলোমিটারের মধ্যে কতগুলি মোবাইল টাওয়ার রয়েছে, ২০ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত কত ফোন হয়েছে, সেগুলির তথ্য পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, যাতে জঙ্গিদের অবস্থান চিহ্নিত করা যায়।
এনআইএ সূত্রে খবর, হামলার ঠিক আগে বৈসরনে দু’টি আল্ট্রা স্টেট সিগন্যাল চালু ছিল। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল সংযোগ করে অডিয়ো, ভিডিয়ো এবং এসএমএসও করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি ব্যবস্থায় মোবাইলের কোনও সিমকার্ড লাগে না। তদন্তকারীদের সন্দেহ, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই নিজেদের মধ্যে সংযোগস্থাপন করছিল জঙ্গিরা।