পহেলগাঁও হত্যালীলার ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রকারী সাজিদ সইফুল্লা। তিনি আদতে পাকিস্তানের নাগরিক! সোমবার পহেলগাঁও কাণ্ডের চার্জশিট জমা দিয়ে এমনই জানাল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তবে সাজিদ এখনও অধরা।
পাকিস্তানের কাসুরের বাসিন্দা সইফুল্লা। পাক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লশকর-এ-ত্যায়বার (এলইটি) ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-এর প্রধান তিনি। চার্জশিটে সেই বিষয়টি উল্লেখ করে এনআইএ জানিয়েছে, তাঁর মাথার দাম ১০ লক্ষ। তাঁকে ধরার ব্যাপারে তথ্য দিতে পারলে মিলবে এই আর্থিক পুরস্কার। বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) অধীনে তাঁকে নিষিদ্ধ জঙ্গি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
শুধু সইফুল্লা নন, চার্জশিটে আরও তিন জনের কথা উল্লেখ করেছে এনআইএ। সেই তিন জন হলেন সুলেমানি শাহ, হামজা আফগানি এবং জিবরান। গত ২৮ জুলাই ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন মহাদেব’-এ নিহত হন তিন জনই। কী ভাবে পহেলগাঁওয়ে হত্যালীলা চালানো হয়, কারা সাহায্য করেছিলেন জঙ্গিদের, তা-ও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে এনআইএ। সহযোগী হিসাবে বশির আহমেদ পারভেজ় জোঠর, বশির আহমেদ জোঠর, মহম্মদ ইউসূফ কাটারি-সহ আরও ছ’জনের নাম দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। দাবি, জঙ্গিদের খাবার এবং রসদ সরবরাহ করেছিলেন তাঁরাই।
পারভেজ পহেলগাঁওয়ের বাটকোটের বাসিন্দা। বশিরের বাড়ি হিল পার্কে। এনআইএ-র দাবি, পহেলগাঁও হানায় জড়িত জঙ্গিদের খাওয়া-দাওয়া, যাতায়াত এবং থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তাঁরা। আর ইউসুফ পথ চিনিয়ে জঙ্গিদের ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
এনআইএ আরও জানিয়েছে, সাত মাসের তদন্তে হাজারের বেশি লোককে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকেই এই হামলার নেপথ্যে এলইটি এবং টিআরএফ-র যোগ স্পষ্ট হয়েছে। চার জঙ্গির বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস), ইউএপিএ এবং অস্ত্র আইনের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতির আবহেই জন্ম হয় টিআরএফ-এর। পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-ত্যায়বার ‘ছায়া সংগঠন’ হিসাবে উঠে আসে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর। সেই গোষ্ঠীর মাথাই সইফুল্লা। তদন্তের সময় জানা গিয়েছিল, পাক সেনায় যথেষ্ট ‘প্রভাব’ ছিল সইফুল্লার। পহেলগাঁও হামলার মাস দুই আগে পাকিস্তানের পঞ্জাবের কাঙ্গলপুরে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। সেখানেই পাক সেনার একটি বড় ব্যাটেলিয়ন ছিল।