Advertisement
E-Paper

আপাতত দু’দিকেই থাকতে চান নীতীশ

আজ তাঁর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যাহ্নভোজনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায় রাজধানী থেকে পটনায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ০৪:৩২
নীতীশ কুমার

নীতীশ কুমার

আপাতত মেপে পা ফেলার পক্ষে নীতীশ কুমার! এক দিকে সনিয়া গাঁধী ও অন্য দিকে নরেন্দ্র মোদী— দুই নৌকায় পা রেখেই আপাতত চলার পক্ষপাতী তিনি।

গত কাল সনিয়া গাঁধীর ডাকা ১৭টি দলের বৈঠকে উল্লেখজনক অনুপস্থিতি ছিল নীতীশ কুমারের। তিনি নিজে না এলেও, দলের প্রবীণ নেতা শরদ যাদবকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান ওই বৈঠকে। যা নিয়ে গত কাল প্রশ্ন উঠেছিল বিরোধী শিবিরে। এরই মধ্যে আজ তাঁর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যাহ্নভোজনে যোগ দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে যায় রাজধানী থেকে পটনায়। যা চলে আজও। শেষ পর্যন্ত মোদীর সঙ্গে নতুন বোঝাপড়ার জল্পনা উড়িয়ে আজ অবস্থান ব্যাখ্যায় এগিয়ে এলেন খোদ নীতীশই। বললেন, ‘‘‘গঙ্গায় পলি জমার সমস্যা ভয়াবহ মাত্রা নিচ্ছে। ফি বছর বন্যা হচ্ছে। তাই রাজ্যের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে এসেছিলাম। মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করাও উদ্দেশ্য ছিল দিল্লিতে আসার।’’

আর বিরোধী ঐক্য?

নীতীশের দাবি, ‘‘একদম অটুট।’’

জেডিইউ নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, পরিস্থিতি বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নীতীশ। রাজ্যের স্বার্থে তিনি যে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত তা মোদীর সঙ্গে বৈঠক করে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। আবার সনিয়া গাঁধীর ডাকা বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মতের মিল হলে বিরোধী জোটের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে সমর্থন করতে আপত্তি নেই নীতীশের। এমনকী, অগস্ট মাসে লালু প্রসাদের ডাকা পটনার জনসভাতেও নীতীশ থাকবেন বলে কথা দিয়েছেন। ফলে বিরোধী শিবিরের পাশে যে তিনি রয়েছেন, তা এই পদক্ষেপগুলি থেকেই স্পষ্ট। জেডিইউয়ের এক নেতার কথায়, ‘‘এটা ভারসাম্যের রাজনীতি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি কোন পক্ষে থাকবেন সেই তাস এখনই দেখাতে চাইছেন না এই কূর্মী নেতা। তাই দু’পক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে চাইছেন তিনি।’’

মোদী-নীতীশ নৈকট্য যে বাড়ছে তা অজানা নয় বিহারের শরিক দল আরজেডি-রও। দুর্নীতি-সহ একাধিক কারণে লালুর দলের সঙ্গে নিয়ে সরকার চালাতে যে অসুবিধা হচ্ছে, ঘনিষ্ঠ মহলে সেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন নীতীশ। যার সুযোগ নিয়ে ঘরোয়া ভাবে প্রাক্তন শরিক নীতীশের কাছে সরকার গড়ার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে বিজেপি। পিছিয়ে নেই নীতীশও। নোট বাতিল ও অন্যান্য প্রসঙ্গে একাধিক বার মোদীর প্রশংসায় যে ভাবে নীতীশ পঞ্চমুখ হয়েছেন, বিজেপি-শাসিত গুজরাতের ধাঁচে বিহারে মদ বিক্রি বন্ধ করেছেন— তাতে দুই নেতার তিক্ততা যে অনেকটাই কমে এসেছে তা স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে সনিয়ার আমন্ত্রণে না আসার পিছনে বিজেপি ও নীতীশের পরিকল্পিত রাজনীতি রয়েছে বলে সরব হয়েছে সরকারের অন্যতম শরিক আরজেডি। দলের নেতা তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব নীতীশের দিল্লি যাওয়াকে তাঁর ‘নিজস্ব বিষয়’ বলে এড়িয়ে গেলেও দলের সহ-সভাপতি রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ আজ বলেন, ‘‘নীতীশের ট্র্যাক রেকর্ড দেখলেই বোঝা যাবে, সব সময়েই তিনি আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। এতে নতুন কিছু নেই!’’ আরজেডি-র তাই প্রশ্ন, কেন এক দিন আগে দিল্লি গিয়ে সনিয়ার বৈঠকে থাকলেন না নীতীশ?

আরজেডি নেতাদের মতে, মোদীকে ইতিবাচক বার্তা দিতেই সনিয়ার আমন্ত্রণ এড়িয়ে গিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। সেই যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে নীতীশের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আমি তো গত ২০ এপ্রিলই সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তখনই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়ে গিয়েছিল। তা ছাড়া, গত কালের বৈঠকে দলের প্রতিনিধি ছিলেন।’’

Nitish Kumar নীতীশ কুমার Narendra Modi সনিয়া গাঁধী নরেন্দ্র মোদী Sonia Gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy