প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। আগরার জনসভায়।
গতকালই প্রধানমন্ত্রী নিজের মন্ত্রীদের বুক ঠুকতে বারণ করেছিলেন। আজ ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশে গিয়ে ফের মোদী-ভজনায় সামিল হলেন খোদ দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। আর জানিয়ে দিলেন, সংবাদ মাধ্যম সেনা অভিযানের তথ্য খোলসা করার পর সরকারের পক্ষ থেকে আর প্রমাণ দেওয়ার কোনও অর্থ হয় না।
সেনার ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর পর গত ক’দিন ধরেই বিরোধী শিবির ‘প্রমাণ’ দেওয়ার দাবি তুলে সরব হচ্ছিল। দু’টি সংবাদ মাধ্যম গতকাল পাকিস্তানের মাটি থেকেই সেই সেনা অভিযানের ‘প্রমাণ’ হাতিয়ে এনেছে। দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাতেই সিলমোহর বসিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের সেনা একশো শতাংশ নিখুঁত অভিযান চালিয়েছে, যা গোটা বিশ্বে বিরল। আমি নিজে সিধেসাধা হয়েও দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে ‘ট্যারা’ও হতে পারি। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে সংবাদমাধ্যম যা প্রমাণ এনেছে, তারপর সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনও ভিডিও ফুটেজ, প্রমাণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যা প্রকাশ পেয়েছে, সেটাই যথেষ্ট।’’
বিজেপি সূত্রের মতে, দেশের ভিতর মুষ্টিমেয় কয়েক জন বিরোধী নেতার চাপে সেনা অভিযানের ফুটেজ বাইরে আনা আদৌ বিচক্ষণতার কাজ হত না। সে কারণে সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে প্রমাণ বাইরে আনতেও সরকারের সহযোগিতা ছিল। কিন্তু সেনা অভিযান নিয়ে রাজনীতি তাতেও থামছে না। আজ শরদ পওয়ারও সরকারকে ‘সংযম’-এর দাওয়াই দিয়ে আসরে নামেন। বলেন, তাঁর আমলে চারবার এই সেনা অভিযান হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের ‘প্রমাণ’-এর পর অরবিন্দ কেজরীবাল ও তাঁর বাহিনী আজ নীরব থেকেছে। সুর কিছুটা নরম করেছেন কংগ্রেসের সঞ্জয় নিরুপমও। কিছুদিন আগে যিনি গোটা অভিযানকেই ধাপ্পা বলেছেন। আজ তিনি বলেন, তাঁর আসল আক্রমণ ছিল নরেন্দ্র মোদীর দিকে। যিনি এটি নিয়ে রাজনীতি করছেন।
কাল নরেন্দ্র মোদী বুক ঠুকতে বারণ করার কথা বলার পরেও বিজেপির রাজনীতিতে যে ইতি টানা হয়েছে, এমন নয়। আজ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সেনা অভিযান নিয়ে এসব কথা বলার জন্য বেছে নিয়েছিলেন ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশের একটি রাজনৈতিক মঞ্চই। যেখানে সেনা অভিযান নিয়ে বিজেপি উৎসব পালন করেন। দলের উত্তরপ্রদেশের সভাপতিও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে সম্বর্ধনাও দেওয়া হয়। আর এই মঞ্চ করার জন্য বেছে নেওয়া হয় আগরা শহরকে। যে আগরা শহরে দলিতদের জড়ো করতে না পেরে সভা বাতিল করতে হয়েছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে। কিন্তু তার কিছুদিন পরে এই দলিত-দুর্গ থেকেই লাখ খানেক জমায়েতে নিজের রাজনৈতিক প্রচার শুরু করেন মায়াবতী।
এই মঞ্চেই প্রধানমন্ত্রীর তারিফ করে পর্রীকর বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সীমান্ত নিরাপদ। ফলে দেশবাসী নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। তবে কিছু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’’ মোদীর প্রশংসা করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকেও একহাত নেন, যাঁরা সেনা অভিযান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছিল। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু শক্তি দেশের প্রতি দায়বদ্ধ নয়। সেনা বাহিনীর গৌরব নিয়ে তারা সংশয় প্রকাশ করছে। যেটি আজ পর্যন্ত কখনও হয়নি।’’
আরও পড়ুন- বুক ঠুকতে বারণ মোদীর, ক্ষান্তি নেই তরজায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy