Advertisement
E-Paper

ঢিলেমি নিয়ে প্রশ্ন কংগ্রেসের অন্দরে

‘রাত জাগা’ দল হিসেবে বহু দশক ধরে পরিচিতি কুড়িয়েছে কংগ্রেস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৪
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

উদ্ধব ঠাকরেই মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন, না হলে শিবসেনার অন্য কেউ! এমনটা ধরে নিয়েই বক্সার বিজেন্দ্র সিংহের ম্যাচ দেখে রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে গিয়েছিলেন কংগ্রেসের বহু নেতা। সারারাত ধরে বিজেপি যে অন্য ‘ম্যাচ’ খেলছিল, ঘুণাক্ষরেও টের পাননি। ঘুম ভেঙেছে আতঙ্কের ফোনে, ‘‘সরকার তো গড়ে নিল বিজেপি!’’

‘রাত জাগা’ দল হিসেবে বহু দশক ধরে পরিচিতি কুড়িয়েছে কংগ্রেস। এ বারে সেখানেও ছোবল মেরেছে বিজেপি। সকালে দাবানলের মতো খবর ছড়াতেই কংগ্রেসের অন্দরের কলহ ততোধিক দ্রুত গতিতে প্রকট। ফের বেরিয়ে এল নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব। ফের আওয়াজ উঠল, সব রাগ ভুলে ফিরে আসুন রাহুল গাঁধী। আর সনিয়া গাঁধী অবিলম্বে ভেঙে ফেলুন কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি।

শিবসেনার সঙ্গে সরকার গড়া নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে দ্বিমত ছিল, এখনও আছে। যে কারণে সনিয়াও মেপে পা ফেলছিলেন। উদ্ধবের ফোন আসার পরেও সময় নিয়েছেন। শরদ পওয়ার কী চাল চালছেন, সেটিও বুঝতে চেয়েছেন। কংগ্রেসের এই সাবধানী পা ফেলা নিয়ে বিস্তর কটাক্ষও শুনতে হয়েছে। যেমন মুম্বইয়ের প্রাক্তন সাংসদ প্রিয়া দত্ত আজও বলেছেন, ‘‘আমার কাছে এ ঘটনা আশ্চর্যের নয়। বিজেপি গোড়া থেকে চুপচাপ ছিল। কংগ্রেস যদি আর একটু তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিত!’’ আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও দলের ঢিলেমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আর গোড়া থেকে সেনা-শরদ জোটের বিরোধিতা করা সঞ্জয় নিরুপম তো সরাসরি বললেন, ‘‘সব রাগ ছেড়ে রাহুল অবিলম্বে কংগ্রেসের হাল ধরুন। দলে যাঁরা লড়াই করেন, তাঁদের গুরুত্ব দিন। যাঁরা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা ভোগ করতে চায়, তাঁদের সরিয়ে দিন সনিয়া। ভেঙে ফেলুন ওয়ার্কিং কমিটি।’’ সরাসরি আহমেদ পটেল, কে সি বেণুগোপাল, মল্লিকার্জুন খড়্গের নাম করেই প্রশ্ন তোলেন নিরুপম।

ঘটনাচক্রে কংগ্রেসের এই তিন নেতাই আজ ছিলেন মুম্বইয়ে। আঙুল তাঁদের দিকে উঠছে বলে তড়িঘড়ি সাংবাদিক সম্মেলনও করলেন। যে আহমেদ পটেল সচরাচর সাংবাদিক সম্মেলন করতে পছন্দ করেন না, তিনি নিজেই বসে গেলেন। তাঁর নেতৃত্বেই দলের প্রবীণ গোষ্ঠী এত দিন রাহুলকে কোণঠাসা করেছেন বলে অভিযোগ। পটেল অবশ্য সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে সনিয়া গাঁধী, শরদ পওয়ারের সঙ্গেও কথা সেরে ফেলেছিলেন। বিজেপির সরকার গড়া নিয়ে যত না প্রশ্নের উত্তর দিতে হল, তার থেকে বেশি প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন দলের মধ্যে থেকে ওঠা অভিযোগের। পটেল দাবি করলেন, কংগ্রেস আদৌ ঢিলেমি করেনি। সরকার ‘প্রায়’ হয়ে গিয়েছিল। অগণতান্ত্রিক কাজ করল বিজেপিই।

শিবরাজ পাটিল থেকে এ কে অ্যান্টনি, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের আর একটি অংশ অবশ্য মনে করেন, শাপে বর হয়েছে। সেনার সঙ্গে সরকার গড়লে অন্য রাজ্যে কংগ্রেসকে খেসারত দিতে হত। শিবসেনার মতো হিন্দুত্ববাদী দলের সঙ্গে হাত মেলালে বিরূপ প্রভাব পড়ত সংখ্যালঘু ভোটে। কিন্তু দীর্ঘদিন সনিয়ার রাজনৈতিক সচিব পদে থেকে কংগ্রেসের ‘চাণক্য’ শিরোপা কুড়োনো আহমেদ পটেলের কাছে এখন কিন্তু মহারাষ্ট্রে ইজ্জতের লড়াই। পওয়ারের ‘চাল’ নিয়ে সংশয় থাকলেও নিজের বিধায়কদের সামলে সরকার গড়াই এখনও লক্ষ্য কংগ্রেসের। সোমবার দলের বৈঠক ডেকেছেন সনিয়া।

Maharashtra Crisis NCP Congress BJP Rahul Gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy