রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অনুমতি দিয়েছিল মাসখানেক আগে। সেই অনুযায়ী ১ মে, বৃহস্পতিবার থেকে বেড়ে গেল এটিএম ব্যবহার করার খরচ। নিয়ম অনুযায়ী, এটিএমে নির্দিষ্ট সংখ্যক লেনদেন বা কাজ গ্রাহক নিখরচায় করতে পারেন। তার বেশি করতে গেলে প্রতিটির জন্য গুনতে হয় টাকা। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সায় দেওয়ায়, সেই খরচই ২ টাকা করে বাড়ল। এত দিন লাগত ২১ টাকা। বেড়ে হল ২৩ টাকা। ক্যাশ রিসাইক্লার মেশিনে (সিআরএম) টাকা জমা দেওয়া ছাড়া বাকি লেনদেনে অতিরিক্ত হারে টাকা দিতে হবে।
এ বার গ্রাহকের এটিএম থেকে টাকা তোলা, ব্যালান্স দেখার মতো নানা কাজের খরচ বেড়ে গেল। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, একেই জিনিসপত্রের চড়া দামের সঙ্গে যুঝছেন সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে এটিএমের খরচ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কিছুটা অবাক করার মতো। অনেকে এখন ইউপিআই-এর মতো ব্যবস্থায় অনলাইন বা ডিজিটাল লেনদেনে স্বচ্ছন্দ। কিন্তু আধা-শহর বা গ্রামাঞ্চলের বহু বাসিন্দা, প্রবীণদের বড় অংশ-সহ একাংশ এখনও তা ব্যবহার করতে পারেন না বা প্রযুক্তিতে তেমন সড়গড় নন। এই সিদ্ধান্ত তাঁদেরই বেশি করে চাপে ফেলবে।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী কোনও গ্রাহকের যে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে, মাসে পাঁচ বার পর্যন্ত সেই ব্যাঙ্কের এটিএম নিখরচায় ব্যবহার করতে পারেন তিনি। অন্য ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে মেট্রো শহরে তিন বার, অন্যান্য শহরে পাঁচ বার এবং গ্রামাঞ্চলেও পাঁচ বার কোনও টাকা-পয়সা ছাড়া লেনদেন-সহ বিভিন্ন কাজে এটিএম ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। তবে কিছু ব্যাঙ্ক তাদের গ্রাহককে নিখরচায় আরও বেশি বার এটিএম ব্যবহার করতে দেয়। যেমন, স্টেট ব্যাঙ্কের গ্রাহকেরা নিজেদের ব্যাঙ্কের এটিএমে প্রতি মাসে মেট্রো অথবা অন্য শহরে পাঁচটি এবং অন্য ব্যাঙ্কের এটিএমে ১০টি লেনদেন বিনামূল্যে করতে পারেন। এটিএম ব্যবহারের মধ্যে ধরা হয় টাকা তোলার মতো আর্থিক লেনদেন, তার বাইরে অ্যাকাউন্টের মিনি স্টেটমেন্ট বার করা, ব্যালান্স দেখা, পাসওয়ার্ড বদলানো ইত্যাদি। সব মিলিয়ে নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশি এটিএম ব্যবহার হলেই প্রতিটি ক্ষেত্রে এত দিন ২১ টাকা নিতে পারত ব্যাঙ্ক। সেই খরচ বেড়ে হল ২৩ টাকা। খরচ বৃদ্ধিতে সায় দিয়ে গত ২৮ মার্চ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে দেশে নগদ লেনদেনের খরচ বাড়ছে। এতে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চল এবং আধা-শহরগুলিতে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় পড়তে হবে। তবে সেই সুযোগে মানুষ আরও বেশি করে মাইক্রো এটিএম, বিজ়নেস করেসপন্ডেন্স-এর মাধ্যমে লেনদেনে উৎসাহী হবেন। কারণ, এখনও এই ধরনের লেনদেনে চার্জ লাগে না।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)