বিয়েবাড়িতে পার্সেল বোমা ‘উপহার’ দিয়েছিলেন ওড়িশার এক কলেজ শিক্ষক। বিস্ফোরণে পাত্র-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করল ওড়িশার আদালত। তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। যে বিয়েবাড়িতে অভিযুক্ত পুঞ্জিলাল মেহের বোমা পাঠিয়েছিলেন, সেটি ছিল তাঁর কলেজের অধ্যক্ষের পুত্রের বিয়ে। অধ্যক্ষের সঙ্গে কর্মসূত্রে বিবাদ চলছিল ওই কলেজ শিক্ষকের। সেই বিবাদের জেরেই অধ্যক্ষের পুত্রকে হত্যার ছক কষেন তিনি।
বিয়ের অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না অভিযুক্ত। বিয়ের পরের দিন পার্সেলে একটি উপহার পেয়েছিলেন ওড়িশার বোলানগিরের বাসিন্দা পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সৌম্য এবং তাঁর স্ত্রী রিমা সাহু। প্যাকেট খুলতেই বিস্ফোরণ। মৃত্যু হয় সৌম্য ও তাঁর ঠাকুমার। মারাত্মক ভাবে ঝলসে যান রিমা। বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন তিনি।
বছর সাতেক আগের ওই ঘটনায় খুন, খুনের চেষ্টা, অপরাধ প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এবং বিস্ফোরক মামলায় বুধবার মেহেরকে দোষী সাব্যস্ত করেছে ওড়িশার আদালত। তাঁর আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে পার্সেল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাকে একটি ‘নৃশংস’ অপরাধ বলে ব্যাখ্যা করলেও এটিকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ মামলা বলে মনে করছেন না ওড়িশার আদালতের বিচারক।
আরও পড়ুন:
আদালতের রায়ের পরে সরকারি আইনজীবী জানান, মামলাটিকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে বিবেচনা করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে আদালত বিষয়টিকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে বিবেচনা করতে চায়নি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সব নৃশংস অপরাধকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে ব্যাখ্যা করা যায় না। অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা জরিমানাও করেছে আদালত।
২০১৮ সালের ওই ঘটনার পরে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক ওড়িশা পুলিশের অপরাধদমন শাখাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ওই বছরের ২৩ মার্চ থেকে তদন্ত শুরু করে অপরাধদমন শাখা। এপ্রিলেই অভিযুক্ত লেকচারার ধরা পড়ে যান তদন্তকারীদের হাতে। সেই থেকে ওড়িশার পটনাগড়ের একটি জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি।