E-Paper

মুখ তেজস্বীই, আসনের কাঁটা সরাচ্ছে মহাজোট

এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, মহাজোটের মধ্যে কংগ্রেস ৫৫ থেকে ৫৮টি আসনে লড়তে পারে। মুকেশ সাহনির বিকাশশীল ইনসান পার্টিকে (ভিআইপি) ১৮ থেকে ২০ এবং তিন বাম দলকে সব মিলিয়ে ৩৫টি আসন ছাড়া হতে পারে। তেজস্বীর আরজেডি গত বারের ১৪৪ থেকে সরে এসে ১৩০ আসনে রাজি হতে পারে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৩১
তেজস্বী যাদব।

তেজস্বী যাদব। —ফাইল চিত্র।

বিরোধী শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী-মুখ হবেন তেজস্বী যাদবই। এই প্রশ্নে ঐকমত্য গড়ে আসন-রফা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় গতি বাড়াল বিহারের ‘মহাগঠবন্ধন’। সূত্রের খবর, আসন সমঝোতার প্রশ্নে আগেকার জট অনেকাই খুলে ফেলা গিয়েছে। এখনও ৬ থেকে ৮টি আসন নিয়ে কংগ্রেস এবং আরজেডি-র মধ্যে টানাপড়েন রয়েছে। সেই জটিলতার মীমাংসাও দু’দিনের মধ্যে হয়ে যাবে বলে আশাবাদী দু’দলের নেতৃত্বই। প্রাথমিক প্রার্থী-তালিকা ঠিক করে ফেলার লক্ষ্যে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব কাল, বুধবার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির (সিইসি) বৈঠকও ডেকে রেখেছেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের বিহার সফর চলাকালীন সে রাজ্যে মহাজোটের সমন্বয় কমিটি দু’দিন আলোচনায় বসে আসন-রফার প্রক্রিয়ায় জট ছাড়ানোর চেষ্টা করেছে। বিরোধী শিবির সূত্রের খবর, প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা তেজস্বীকে মুখ হিসেবে সামনে রেখেই যে এ বারের নির্বাচনে লড়াই হবে, এই প্রস্তাবে আর সংশয় রাখতে চায়নি মহাজোটের শরিক কোনও দলই। তারই পাশাপাশি, আসন ধরে ধরে রফার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গত বারের জেতা আসন এবং যে যেখানে দ্বিতীয় স্থানে ছিল, সেই আসন সংশ্লিষ্ট দলের হাতেই থাকবে— এই প্রাথমিক শর্ত বজায় থাকছে। কংগ্রেস এবং আরজেডি-র মধ্যে কিছু কেন্দ্র নিয়ে দাবি, পাল্টা দাবি আছে। তবে সূত্রের খবর, দু’পক্ষের টানাটানি ২৪-২৫ আসন থেকে কমে এখন ৬ থেকে ৮টিতে এসেছে। যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। বিহারে ভোটের যে নির্ঘণ্ট ঘোষিত হয়েছে, তাতে প্রথম দফার ১২১টি বিধানসভা আসনের জন্য ১৭ অক্টোবর এবং পরের দফার ১২২টি আসনের জন্য ২০ তারিখের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। কাজেই বেশি সময় কোনও পক্ষেরই হাতে নেই।

এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, মহাজোটের মধ্যে কংগ্রেস ৫৫ থেকে ৫৮টি আসনে লড়তে পারে। মুকেশ সাহনির বিকাশশীল ইনসান পার্টিকে (ভিআইপি) ১৮ থেকে ২০ এবং তিন বাম দলকে সব মিলিয়ে ৩৫টি আসন ছাড়া হতে পারে। তেজস্বীর আরজেডি গত বারের ১৪৪ থেকে সরে এসে ১৩০ আসনে রাজি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই মর্মে বাঁটোয়ারার পরে ২৪৩ বিধানসভা আসনের বিহারে কয়েকটি আসন পড়ে থাকবে পশুপতি কুমার পারসের রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি (আরএলজেপি) এবং হেমন্ত সরেনের ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকে ( জেএমএম) বরাদ্দ করার জন্য। তাতে তারা রাজি হবে কি না, সেই প্রশ্ন অবশ্য থাকছে।

নির্বাচন কমিশন সোমবার বিহারে দু’দফায় বিধানসভা ভোট ঘোষণা করার আগেই ভার্চুয়াল বৈঠকে সামগ্রিক পরিস্থিতি আলোচনায় বসেছিলেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে ছিলেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল, বিহারে এআইসিসি-র তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৃষ্ণ আল্লাভারু, সদ্যনিযুক্ত তিন সিনিয়র পর্যবেক্ষক অশোক গহলৌত, ভূপেশ বঘেল ও অধীর চৌধুরী এবং প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিহারের ভোটের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা পর্যবেক্ষকেরাও ছিলেন বৈঠকে। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক পরিস্থিতি আলোচনার পাশাপাশি বুধবারের (৮ তারিখ) সিইসি বৈঠকের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। ওই বৈঠকের পরেই নির্বাচনী পর্যবেক্ষকেরা বিহারে যাবেন। রাজ্যে পর্যবেক্ষকদের অঞ্চল ভিত্তিতে কাজ ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছেন অধীরেরা। তবে বাংলায় ভোটার তালিকার বিশেষ আমূল সংশোধন (এসআইআর) আসন্ন, এমতাবস্থায় নিজের রাজ্যে ব্যস্ততার কারণে বিহারে জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার।

এআইসিসি-র এক নেতা বলছেন, ‘‘বিহারে স্লোগান হচ্ছে, ’১৪ নভেম্বর (গণনার দিন), বিহার সে ভোট চোর বাহার’! এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে শীঘ্রই আসন ভাগ চূড়ান্ত এবং প্রার্থী ঠিক করে প্রচারে গতি আনা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tejashwi Yadav Bihar Assembly Election 2025 Bihar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy