ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সোমবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতর ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছে বিরোধী দলগুলি। রবিবার তার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে বিরোধী শিবিরে। বাংলা ভাষা ও বাংলাভাষীদের উপর আক্রমণের অভিযোগের আবহে কমিশন ঘেরাও কর্মসূচিতেও ভাষার বৈচিত্র তুলে ধরতে চাইছে বিরোধীরা।
সূত্রের খবর— বাংলা, ইংরেজি, তামিল, মরাঠি, মালয়ালি, হিন্দি, এই সমস্ত ভাষায় প্ল্যাকার্ড থাকবে বিরোধী সাংসদদের হাতে। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল তৈরি করছে বাংলায় লেখা প্ল্যাকার্ড। কংগ্রেসের দায়িত্ব ইংরেজি এবং মালয়ালি প্ল্যাকার্ড তৈরি করার। তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে তৈরি করবে তামিল ভাষায় প্ল্যাকার্ড। হিন্দির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিকে। আর মরাঠি ভাষায় স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড তৈরি করছে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) শিবির।
সোমবার সকাল ১১টাতেই সংসদের দুই কক্ষ লোকসভা এবং রাজ্যসভা অচল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধী শিবির। তার পর সাড়ে ১১টায় সংসদের মকরদ্বারের সামনে জমায়েত হবেন বিভিন্ন বিরোধী দলের প্রায় ২০০ সাংসদ। সেখান থেকেই মিছিল করে তাঁরা যাবেন নির্বাচন সদন পর্যন্ত। তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ ২০০ জন সাংসদকে মিছিল করে কমিশন দফতর পর্যন্ত যেতে দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ী অনেকেই। তৃণমূলের এক সাংসদ একান্ত আলোচনায় বলেন, ‘‘মনে হয় না ওরা যেতে দেবে! মাঝপথ থেকেই পুলিশ সাংসদদের আটক করতে পারে।’’
চলতি বাদল অধিবেশনে প্রতিদিন এসআইআর নিয়ে সংসদে বিক্ষোভ জারি রেখেছে বিরোধীরা। তাদের তরফে দাবি তোলা হয়েছিল এসআইআর নিয়ে সংসদে আলোচনার জন্য নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করুক সরকার। কিন্তু তা হয়নি। গত ২১ জুলাই ধর্মতলায় দলীয় সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, এসআইআর নিয়ে প্রয়োজনে কমিশনের দফতর ঘেরাও করা হবে। এই কর্মসূচিতে বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে তৃণমূলের। মমতার ঘোষণা করা কর্মসূচিতে বাংলার শাসকদল সার্বিক ভাবে গোটা বিরোধী শিবিরকে এক জায়গায় আনতে পেরেছে।
এসআইআর-এর কারণে বিহারের ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। বিহারের ভোট চলতি বছরের শেষে। বছর ঘুরলেই পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, অসম, তামিলনাড়ুতেও বিধানসভা ভোট। বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশনকে বিজেপি ব্যবহার করছে। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেছেন, ভোট চুরি হচ্ছে। যদিও তা উড়িয়ে দিয়েছে কমিশন। এসআইআর নিয়ে মামলাও হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত এসআইআর প্রক্রিয়ায় এখনও কোনও হস্তক্ষেপ করেনি। তবে কমিশনকে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। মামলার শুনানি চলছে। এই আবহেই সোমবার বিরোধীরা কমিশন অভিযান করতে চলেছে।