বাদল অধিবেশনের শেষ বেলায় লোকসভায় পা দিতেই, প্রথম বার বিরোধীদের পক্ষ থেকে ‘ভোটচোর, গদি ছোড়’ স্লোগান শুনতে হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। পাল্টা আক্রমণে অধিবেশনের শেষে স্পিকারের চা-চক্রে রাহুল গান্ধীর নাম না করে মোদী বলেন, কংগ্রেসে একাধিক প্রতিভাবান নেতা থাকলেও, গান্ধী পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কারণে তাঁদের সংসদে বলতে দেওয়া হচ্ছে না।
ভোট কারচুপির প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন ও বিজেপির আঁতাঁতের অভিযোগ তুলে সরব রয়েছেন কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের বড় অংশ। যা নিয়ে আলোচনার দাবিতে কার্যত ভেস্তে গিয়েছে অধিবেশন। আজ স্পিকার ওম বিড়লা বাদল অধিবেশনের খতিয়ান পড়া শুরু করার ঠিক আগে লোকসভায় ঢোকেন মোদী। কংগ্রেসের সাংসদ মাণিকম টেগোর বলেন, ‘‘মোদী প্রবেশ করতেই তাঁকে ‘ভোটচোর গদি ছোড়’ স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে।’’ যা অস্বস্তিতে ফেলে দেয় শাসক শিবিরকে। পরে সংসদে ভাষার প্রয়োগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্পিকার বিড়লা।
অধিবেশন মুলতুবির পরে প্রতি বারের মতোই চা-চক্রের আয়োজন করেছিলেন স্পিকার। সর্বদলীয় ওই চা-চক্রে বিরোধীরা অনুপস্থিত থাকলেও, অন্য দলগুলির সাংসদেরা ছিলেন। সূত্রের মতে, সেই বৈঠকে নাম না করে রাহুলের সমালোচনা করে মোদী বলেন, ‘‘সংসদে বিশেষ করে কংগ্রেস দলে একাধিক যুব সাংসদ রয়েছেন। যাঁরা যোগ্য ও প্রতিভাবান। কিন্তু (গান্ধী) ‘পরিবার’-এর নিরাপত্তাহীনতার কারণে ওই যোগ্য নেতারা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’’
সূত্রের মতে, মোদী বৈঠকে বলেন, অধিকাংশ বিরোধী দল গেমিং বিল-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের কারণে আলোচনা হয়নি। মোদীর কথায়, গ্রামীণ এলাকার বহু তরুণ সাংসদ রয়েছেন। যাঁরা আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক গতিমুখ স্থির করবেন। তাই সংসদের আলোচনায় ওই তরুণ সাংসদদের যোগদান করা উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। তাঁর মতে, এই (চাপিয়ে দেওয়া) নীরবতা সংসদের গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করেছে। যার জন্য কংগ্রেসের ‘স্বেচ্ছাচারী মনোভাব’কেই দায়ী করেছেন মোদী। সূত্রের মতে, বৈঠকে কংগ্রেসের ‘স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের’ প্রতি জনগণের ক্ষোভের উদাহরণ দিতে গিয়ে মোদী বলেন, জরুরি অবস্থার সময়ে তিনি বাসে যাচ্ছিলেন। কনডাক্টর টিকিট কেটে বাড়তি এক টাকার নোট ফিরিয়ে দেন সহযাত্রী বৃদ্ধাকে। তিনি নোটটি পাল্টানোর জন্য জোরাজুরি করেন। প্রশ্ন করে জানা যায়, ওই বৃদ্ধা জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে গঠিত তহবিলে ওই একটি টাকা দান করতে চান। কিন্তু নোটটি নোংরা। তাই তিনি পরিষ্কার নোট চাইছিলেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)