শুধু পাকিস্তান থেকেই নয়, বাংলাদেশের মাটিকে কাজে লাগিয়েও ভারতে নাশকতা চালানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন ফ্রান্স সফররত ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য শমীক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বক্তৃতা করার সময় বিজেপি সাংসদ শমীক বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এনেছেন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং সেখানে ভারত-বিরোধী শক্তির ‘সক্রিয়তা’ নিয়ে অনেকে উদ্বিগ্ন বলে প্রতিনিধিদল সূত্রের দাবি। তবে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়েও শমীককে প্যারিসে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে, যার উত্তর শমীক এড়িয়েই গিয়েছেন।
বিশ্ব সন্ত্রাসের ‘আঁতুড়ঘর’ হিসেবে পাকিস্তানের ভূমিকা এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতের সাফল্যের কথা আন্তর্জাতিক মহলকে জানাতে সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধিদলকে বিদেশে পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে যে প্রতিনিধিদল ইউরোপে গিয়েছে, বঙ্গ বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক সেই দলের সদস্য। ফ্রান্সের সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মঙ্গলবার প্যারিসের ভারতীয় দূতাবাসে প্রবাসী ভারতীয়দের জমায়েতের সামনেও পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছে প্রতিনিধিদলটি। সেখানেই শমীকের ভাষণে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন:
শমীক প্রকারান্তরে পাকিস্তান আর বাংলাদেশের ‘যোগসাজশে’র অভিযোগ তুলেছেন। প্রবাসী ভারতীয়দের জমায়েতে বাঙালিরাও ছিলেন। শমীক তাঁদের উদ্দেশে বলতে গিয়েই পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ তোলেন। বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘আপনারা জানেন যে, আমাদের (ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে) ২,২০০ কিলোমিটারের বেশি বহুরন্ধ্র আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে।’’ সীমান্তের অনেক জায়গায় কাঁটাতার না থাকার সুযোগ নিয়ে ভারতে নাশকতা চালানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে শমীক ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে বাংলাদেশকে তাদের লঞ্চপ্যাড হিসেবে ব্যবহার করতে। সন্ত্রাসের জন্য, সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য।’’
বিদেশ সফররত বহুদলীয় প্রতিনিধিদলগুলি সন্ত্রাসের নেপথ্যে পাকিস্তানের ভূমিকা নিয়ে নানা তথ্য বিভিন্ন দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরছে। কিন্তু ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ার কাজে পাকিস্তান যে বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগসাজশ তৈরি করেছে, সে কথা এখনও পর্যন্ত শমীক ছাড়া কেউ বলেননি। প্যারিস থেকে ফোনে আনন্দবাজার ডট কম-কে শমীক বলেন, ‘‘আমি কারও নাম বলব না। তবে আমাদের প্রতিনিধিদলের একাধিক সদস্য বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছেন। আমার সঙ্গে সে বিষয়ে আলোচনাও করেছেন।’’
প্রবাসী ভারতীয়দের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়েও শমীককে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। সে সব প্রশ্নের রাজনৈতিক অভিমুখ ছিল। বিজেপি সাংসদ সে প্রসঙ্গে মন্তব্য করা এড়িয়ে যান। নিজের ভাষণে তিনি বলেন, ‘‘মতভেদ থাকা সত্ত্বেও আমরা ভারতের সব রাজনৈতিক শক্তি একত্রিত হয়ে এখানে এসেছি একটাই বার্তা দিতে। তা হল, পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ভাবে বিচ্ছিন্ন করতে হবে, পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র’ ঘোষণা করতে হবে।’’ পরে শমীক বলেন, ‘‘আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে আমরা এখানে আসিনি। এটা রাজনীতি করার মঞ্চ নয়। তাই আমি কিছু প্রসঙ্গে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছি।’’