চাকরিহারাদের জন্য বিকেল ৫টায় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সমাজমাধ্যমে এটিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক সম্মেলন’ বলে উল্লেখ করেছেন। লিখেছেন, “চাকরিহারা শিক্ষক ভাইবোনদের জন্য আজ বিকেল ৫টায়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে, নবান্নে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবাদিক সম্মেলন।” স্বাভাবিক ভাবেই এই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কী বলেন, চাকরিহারাদের জন্য তিনি কী ঘোষণা করেন, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের এপ্রিলের গোড়ায় সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি নিয়োগ মামলার রায়ে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের চাকরি বাতিল করে দেয়। সেই সঙ্গে নতুন নিয়োগের জন্য রাজ্যকে তিন মাস সময় দিয়েছিল। পরে অবশ্য আবেদনের ভিত্তিতে নিয়োগের সময়সীমা বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
অন্য দিকে, চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা তার পর থেকে আন্দোলনে নেমেছেন। বিকাশ ভবনের সামনে ২১ দিন ধরে ধর্না দিচ্ছে তাঁদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের দাবি, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান। সরকারকে সোমবার পর্যন্ত ‘ডেডলাইন’ও বেঁধে দেন তাঁরা। তাঁদের দাবিমতোই চাকরিহারাদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সোমবার বিকাশ ভবনে বৈঠক করেন শিক্ষাসচিব বিনোদ কুমার এবং সমগ্র শিক্ষা মিশন প্রকল্পের ডিরেক্টর শুভ্র চক্রবর্তী। প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকের পর চাকরিহারারা জানান, তাঁরা সরকারের কাছে পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের চাকরিতে বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছেন।
চাকরিহারাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগে চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আপাতত গ্রুপ সি কর্মীদের রাজ্য সরকার প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে দেবে। রাজ্যের যুক্তি, সরকার চাকরিহারাদের প্রতি সংবেদনশীল। তাঁদের পরিবার রয়েছে। এত দিন তাঁরা চাকরি করতেন। এখন চাকরি চলে যাওয়ায় পরিবারের উপর তার প্রভাব পড়ছে। সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে। সেই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভাতা হিসাবে এই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্যের ওই সিদ্ধান্ত সাময়িক। ইতিমধ্যেই চাকরিহারা এসএসসি-র গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।