E-Paper

বাচ্চাদের চিকিৎসাটা করাতে দিন, আর্জি পাক বাবা-মায়ের

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হায়দরাবাদ থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য এসেছেন এক পাক দম্পতি। শিশুদু’টির বাবা একটি সংবাদমাধ্যমকে ফোনে জানিয়েছেন, তাঁদের দুই সন্তানের বয়স মাত্র ৯ এবং ৭ বছর।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪১

— প্রতীকী চিত্র।

পাকিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন দুই সন্তানের চিকিৎসার জন্য। সব মিলিয়ে এক কোটি টাকার বেশি খরচও করে ফেলেছেন। অথচ পহেলগাম-কাণ্ডের জেরে ভারত সরকার অবিলম্বে অন্যান্য পাক নাগরিকদের তো বটেই তাঁদেরও দ্রুত নিজেদের দেশে ফেরত যেতে নির্দেশ দিয়েছে। এই অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন এক পাকিস্তানি দম্পতি। একই অবস্থা ভারতে চিকিৎসা করাতে আসা আরও বেশ কয়েক জন পাকিস্তানি নাগরিকের। এখন তাঁদের একটাই আর্জি, অন্তত মানবিক কারণে চিকিৎসার সুযোগটা দেওয়া হোক। পাকিস্তান সরকারকেও এ নিয়ে ভারতকে অনুরোধ করার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের হায়দরাবাদ থেকে দুই সন্তানকে নিয়ে ভারতে চিকিৎসার জন্য এসেছেন এক পাক দম্পতি। শিশুদু’টির বাবা একটি সংবাদমাধ্যমকে ফোনে জানিয়েছেন, তাঁদের দুই সন্তানের বয়স মাত্র ৯ এবং ৭ বছর। জন্মগত হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছে দু’জনেই। উন্নত চিকিৎসার জন্যই তাঁরা বহু টাকা খরচ করে দিল্লিতে এসে ওই শিশুদের চিকিৎসা করাচ্ছেন। বাবার আর্জি, শিশুদু’টির চিকিৎসা শেষ হওয়া পর্যন্ত যেন তাদের ভারতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, হাসপাতাল ও চিকিৎসকেরা পরিবারটিকে যথাসম্ভব সাহায্য করছেন। কিন্তু পুলিশ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাঁদের দ্রুত নিজেদের দেশে ফিরতে নির্দেশ দিয়েছে। দুই শিশুর বাবা বলেন, “সরকারের কাছে আবেদন করছি, আমার বাচ্চাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ করার অনুমতি দেওয়া হোক। আমাদের যাতায়াত, থাকা এবং ওদের চিকিৎসায় প্রায় ১ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে’’

পহেলগাম-কাণ্ডের জেরে ভারত এ দেশ থেকে পাকিস্তানিদের অবিলম্বে দেশে ফেরার নির্দেশ দেওয়ার পরেই পাল্টা পদক্ষেপ করেছে ইসলামাবাদও। সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, যার জেরে ইতিমধ্যেই কয়েকশো লোক এ দেশ থেকে পাকিস্তানে এবং পাকিস্তান থেকে ভারতে ফিরেছেন। এ দিকে অটারী সীমান্ত বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কাশ্মীরে বেড়াতে আসা এলহাম। একটি ভ্যানে চড়ে বেড়াতে এসেছেন তিনি। সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভ্যানেই থাকতে হচ্ছে তাঁকে। বিপাকে পড়ে সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।

এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান থেকে চার সন্তান-সহ বেআইনি ভাবে ভারতে ঢুকে ভারতীয় প্রেমিককে বিয়ে করে খবরে উঠে আসা সীমা হায়দর বিপাকে পড়েছেন। ভারত সরকারের কাছে সীমার আবেদন, তিনি ‘পাকিস্তানের মেয়ে’ হলেও এখন তিনি ‘ভারতের বধূ’। তাই তাঁকে যেন এ দেশেই থাকতে দেওয়া হয়।

পাকিস্তানিদের অবিলম্বে ভারত ছাড়তে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে সমাজমাধ্যমে আর্জি জানিয়েছেন উদ্বিগ্ন সীমা। এ দেশে এসে তিনি ‘প্রেমিক’ শচিন মিনাকে বিয়ে করে এখন এখন গ্রেটার নয়ডায় থাকেন। তাঁদের একটি কন্যাসন্তানও হয়েছে।

সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো-বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে তাঁকে ভারতে থাকতে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সীমা বলেছেন, ‘‘আমি পাকিস্তানে ফেরত যেতে চাই না। আমি প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগীকে অনুরোধ করছি, আমাকে এখানেই থাকতে দেওয়া হোক।’’

সীমা এ-ও জানিয়েছেন যে, শচিনের সঙ্গে বিয়ের পরে তিনি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। সীমার আইনজীবী এপি সিংহেরও দাবি, সীমা এখন আর পাকিস্তানের নাগরিক নন। তাঁর সঙ্গে ভারতীয় নাগরিক শচিনের বিয়ে হয়েছে এবং তখন থেকেই সীমা ভারতে আছেন। ভারতীয় স্বামীর সঙ্গে জুড়ে রয়েছে তাঁর নাগরিকত্ব। তা ছাড়া তাঁদের একটি কন্যাসন্তানও হয়েছে। তাই কেন্দ্রের এই নির্দেশিকা সীমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

আইনজীবী এ কথা জানালেও ভারত সরকার, উত্তরপ্রদেশ সরকার কী পদক্ষেপ করে, এখন সেদিকেই নজর উদ্বিগ্ন সীমার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pahalgam Terror Attack India-Pakistan medical treatment

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy