Advertisement
E-Paper

হাইলাকান্দিতে দলীয় কোন্দলে স্থগিত জেলা বিজেপির নির্বাচন

দলের দু’পক্ষের অন্তর্বিরোধের জেরে স্থগিত হল হাইলাকান্দি জেলা বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪৩

দলের দু’পক্ষের অন্তর্বিরোধের জেরে স্থগিত হল হাইলাকান্দি জেলা বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া।

আজ হাইলাকান্দিতে সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান জেলা বিজেপি সভাপতি ক্ষিতীশরঞ্জন পাল। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘জেলা বিজেপি কমিটি তৈরির প্রক্রিয়াকে বানচাল করতে ষড়যন্ত্র চলছে। এর পিছনে জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৌম্যজিৎ দত্তচৌধুরীর হাত রয়েছে।’’

ক্ষিতীশবাবু দাবি করেন, জেলা বিজেপির কয়েক জন নেতার নাম দলের সক্রিয় সদস্যপদের তালিকা থেকে রহস্যজনক ভাবে বাদ গিয়েছে। লালা ও হাইলাকান্দির কয়েক জন বিজেপি নেতা এবং পুরসদস্যের নামও তাতে নেই। তিনি জানান, এ দিন হাইলাকান্দিতে বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নির্বাচনী আধিকারিক শশাঙ্কশেখর ধর জেলার সব মণ্ডল কমিটির সভাপতি, জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি-সহ অন্য নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই দলীয় তালিকায় অসঙ্গতির বিষয়টি সামনে আসে। সদস্যপদের তালিকা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত সাংগঠনিক নির্বাচন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ক্ষিতীশবাবু জানান, সৌম্যজিৎ দত্ত চৌধুরী হাইলাকান্দি বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছেন। কারণ, দলের সংবিধান অনুসারে নির্বাচনে লড়লে সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ক্ষমতা না থাকলেও, সৌম্যজিৎবাবু তার অপব্যবহার করছেন বলে তিনি অভিযোগ তোলেন। সাংবাদিক বৈঠকে হাজির প্রাক্তন দুই জেলা সভাপতি সুব্রত শর্মা মজুমদার এবং গোবিন্দলাল চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন— হাইলাকান্দি জেলায় বিজেপির সাংগঠনিক কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হবে না। সাংবাদিক বৈঠকে সুব্রত নাথ, নেপাল দাস, মিহির চক্রবর্তীর মতো দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

দলের জেলা নির্বাচনী আধিকারিক শশাঙ্কশেখর ধর এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যোগাযোগ করা যায়নি সৌম্যজিৎবাবুর সঙ্গেও।

অন্য দিকে, এ মাসেই বিজেপির সাংগঠনিক নির্বাচন-পর্ব শেষ হবে করিমগঞ্জে। বিজেপির মণ্ডল কমিটির সভাপতি নির্বাচনের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। দলীয় নীতি অনুসারে, প্রতিটি মণ্ডল থেকে ২ জন করে সদস্য জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচনে ভোটদান করতে পারবেন। সেই অনুসারে করিমগঞ্জের ১০টি মণ্ডলে ২০ জন জেলা সভাপতির নির্বাচনে ভোট দেবেন। ফলে জেলা বিজেপির সভাপতি পদের দায়িত্বে থাকা বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য মণ্ডল কমিটি গঠনে ব্যাপক তৎপরতা দেখিয়েছেন। কিন্তু তারপরও অধিকাংশ
মণ্ডলের সভাপতি, প্রতিনিধি নির্বাচনে জেলা সভাপতিকে হারের মুখ দেখতে হয়েছে।

এক সময় বদরপুর বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন বিশ্বরূপবাবু। কিন্তু বদরপুরের একটি মণ্ডলে নিজের ঘনিষ্ঠকে জয়ী করাতে পারেননি বলে অভিযোগ। সংগঠনকে মজবুত রাখতে জেলার প্রায় সবকটি মণ্ডল কমিটি নির্বাচন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিল বদরপুরের ক্ষেত্রে। বদরপুরেই ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নিতে হয়েছে্। ফলে বর্তমান জেলা সভাপতির বিশেষ করে বদরপুরের নেতৃত্বে ভাঁটার টান চলছে বলে বিজেপির একাংশের দাবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘প্রদেশ বিজেপির উপ-সভাপতি মিশনরঞ্জন দাস এবং বর্তমান জেলা সভাপতি বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের মধ্যে মনোমালিন্য চলছে।’’ দলের নেতাদের একাংশের বক্তব্য, অসমে সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সরকারি কমিটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়েও সরকারি কমিটি বদল হচ্ছে্। কিন্তু সভাপতি বিশ্বরূপবাবু বিজেপির কোন নেতার সঙ্গে আলোচনা না করে নিজের ইচ্ছেমতো সে সব কমিটিতে বিভিন্ন জনের নাম সুপারিশ করছেন। ফলে নাম পাঠানো নিয়ে বর্তমান সময়ে ২ জনের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। তাই মিশনবাবুও চাইছেন না জেলা সভাপতি পদে বিশ্বরূপবাবু পুনর্বহাল থাকুন। সে ক্ষেত্রে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কৃষ্ণ দাস, সুধাংশু দাসের নাম জেলা সভাপতি হিসেবে চর্চায় উঠে আসছে। একই সূত্র দাবি করেছে, করিমগঞ্জের ১০টি মণ্ডলের মধ্যে পাথারকান্দির ৪টি এবং বদরপুরের ১টি মণ্ডল ছাড়া অন্য কোন মণ্ডলের সভাপতি এবং প্রতিনিধিও বিশ্বরূপবাবুর পক্ষে নন। তবে বর্তমান জেলা সভাপতির সঙ্গে রয়েছেন পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল। তিনি বিশ্বরূপবাবুকে সব ধরনের সহায়তা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সব মিলিয়ে করিমগঞ্জ জেলা বিজেপির নির্বাচন ক্রমশই জমে উঠছে। সূত্রের আর দাবি, মিশনবাবু এবং বিশ্বরূপবাবুর মধ্যে মনোমালিন্য অব্যাহত থাকলে বর্তমান সভাপতিকে পুনরায় নির্বাচিত করা অধিক কষ্টকর হয়ে পড়বে।

bjp election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy