অবশেষে শ্রীনগর পর্যন্ত পৌঁছে গেল ভারতীয় রেল। ট্রেনের সওয়ারি হলেন ৮০০ জওয়ান। উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল লিঙ্ক (ইউএসবিআরএল) নির্মাণের পরে এই প্রথম রেলপথে শ্রীনগর গেল সেনা। দিল্লি থেকে ট্রেনে চেপে কাটরা হয়ে মঙ্গলবার শ্রীনগরে পৌঁছোন ভারতী সেনাবাহিনীর ৮০০ জওয়ান। বাড়িতে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন ওই জওয়ানেরা। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে বন্ধ হয়ে যায় জম্মু ও শ্রীনগর বিমানবন্দর। সে কারণে ছুটি শেষ হলেও উত্তেজনার আবহে কাজে যোগ দিতে পারছিলেন না ওই জওয়ানেরা। শেষ পর্যন্ত দিল্লি থেকে ট্রেনে চেপে কাটরা হয়ে শ্রীনগর পৌঁছোলেন তাঁরা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র সংবাদমাধ্যম ‘দ্য প্রিন্ট’-কে জানিয়েছে, দিল্লি থেকে জওয়ানদের নিয়ে ছেড়েছিল ট্রেনটি। এর পরে কাটরা থেকে ট্রেন বদলে সরাসরি শ্রীনগরে পৌঁছোন জওয়ানেরা। কাটরা থেকে শ্রীনগরে পৌঁছোতে সময় লাগে চার ঘণ্টা।
আরও পড়ুন:
কাশ্মীরকে বাকি দেশের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত করার জন্য প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। জানুয়ারিতে কাটরা থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত ছুটেছিল ২২ কামরার ট্রেন। সেটাই ছিল ওই পথে ‘ট্রায়াল রান’-এর চূড়ান্ত পর্যায়। তার পরেই দিল্লি থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত টানা ট্রেন চলাচলের পথ খুলে যায়। গত মাসে কাটরা থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের সূচনা করার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। যদিও খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেখানে যেতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী। ট্রায়াল রানের পরে রেল কর্তৃপক্ষ ওই লাইনে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি বেঁধে দেন। কর্তৃপক্ষ জানান, ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮৫ কিলোমিটারে গতিতে ওই লাইনে ছুটতে পারবে ট্রেন।
উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল লিঙ্ক প্রকল্পে ২৭২ কিলোমিটার রেল লাইন তৈরির কথা ছিল। ২০০৯ সালের অক্টোবরে কাজ়িগুন্দ-বারামুল্লা বিভাগে ১১৮ কিলোমিটার লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২০১৩ সালে বনিহাল-কাজ়িগুন্দ বিভাগে ১৮ কিলোমিটার লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ২০১৪ সালে উধমপুর থেকে কাটরা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার পথে ট্রেন চালু হয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বনিহাল থেকে সঙ্গলদান পর্যন্ত ৪৮.১ কিলোমিটার লাইনে ট্রেন চালু হয়। গত বছর জুনে সঙ্গলদান থেকে রিয়াসি পর্যন্ত ৪৬ কিলোমিটার পথে লাইনের কাজ শেষ হয়। রিয়াসি থেকে কাটরার মাঝে ১৭ কিলোমিটার লাইনের কাজ বাকি ছিল। সেই কাজও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। এ বার দিল্লি থেকে টানা শ্রীনগর পর্যন্ত ট্রেনে চেপে যাতায়াত করল সেনা। এর ফলে বর্তমান আবহে বাড়তি সুবিধা পেল সেনাবাহিনী বলেই মনে করা হচ্ছে।