Advertisement
E-Paper

শিলচরে ঠিকানা পাচ্ছে না ডাকঘরই

এলাকার ডাকঘর সাধারণ মানুষের প্রধান পরিচয়। নিজের ঠিকানায় তাই ডাকঘরের উল্লেখ থাকা অনেকটা যেন ‘বাধ্যতামূলক’। শিলচরে সেই ডাকঘরই ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছে না! সবার ঠিকানা হলেও কেউ তার ঠিকানা হতে রাজি নয়!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৪

এলাকার ডাকঘর সাধারণ মানুষের প্রধান পরিচয়। নিজের ঠিকানায় তাই ডাকঘরের উল্লেখ থাকা অনেকটা যেন ‘বাধ্যতামূলক’। শিলচরে সেই ডাকঘরই ঠিকানা খুঁজে পাচ্ছে না! সবার ঠিকানা হলেও কেউ তার ঠিকানা হতে রাজি নয়!

শিলচরে ট্রেন থেকে নেমে হাসপাতাল যাওয়ার জন্য সামান্য এগোলেই অচেনা কারও মনে হতে পারে, গন্তব্য আর দূরে নয়। কারণ স্পষ্ট অক্ষরে বড় বড় হরফে লেখা রয়েছে, হাসপাতাল রোড ডাকঘর। তির চিহ্নিত বোর্ড বা এলাকায় ঢোকার সঙ্কেত নয়— পুরোদস্তুর ডাকঘর। তাই বলে কাছাকাছি এলাকায় হাসপাতাল খুঁজতে গেলে বড় ভুল করা হবে। এমনকী হাসপাতাল রোড খুঁজলেও মিলবে না।

কারণ জায়গাটি সরকারি খাতাপত্রে ইরাবত সরণি হিসেবে পরিচিত। সাধারণ মানুষ চেনেন ট্রাঙ্ক রোড হিসেবে। হাসপাতাল রোড সেখান থেকে অনেকটা দূরে। পার্ক রোড, সেন্ট্রাল রোড, নাজিরপট্টি, প্রেমতলা পেরনোর পর হাসপাতাল রোডের শুরু। মাঝামাঝি জায়গায় রয়েছে শিলচর সিভিল হাসপাতাল।

তা হলে ট্রাঙ্ক রোডে হাসপাতাল রোডের ডাকঘর কেন? আসাম সার্কলের পোস্টাল ডিরেক্টর ঋজু গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আজকাল শহরে কেউ ডাকঘরকে ভাড়া দিতে চান না। আগে যাঁদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল, তাঁদেরও অনেকে এখন ঘর ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। হাসপাতাল রোড ডাকঘরেও সেই সমস্যা। ঘর ছাড়তে হয়েছে বলে আপাতত ট্রাঙ্ক রোডে সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্টের অফিসে স্থানান্তরিত হয়েছে হাসপাতাল রোডের ডাকঘর।

বিভাগীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, হাসপাতাল রোডে নিজস্ব এলাকাতেই এক ভাড়াঘরে ছিল সেখানকার ডাকঘর। ২০০০ সালের ১ অক্টোবর ৩ হাজার ১০০ টাকা মাসিক ভাড়ায় চুক্তি হয়। দেড় দশক পেরলেও ভাড়া বাড়েনি। ফলে চুক্তির মেয়াদ পেরিয়ে যেতেই ঘর ছাড়তে বলা হয় ডাক বিভাগকে। কিন্তু ঘর না পাওয়ায় তারা সেখানেই কাজ চালাচ্ছিলেন। গৃহকর্তা আলো, জলের মতো পরিষেবা বন্ধ করে দেন।

সূত্রটি জানান, নতুন ভাড়াঘরের খুঁজতে তাঁরা চেষ্টার ত্রুটি করছেন না। দু’বার স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। কিন্তু সরকারি হার জেনেই কেউ আগ্রহ দেখাননি। যে দুয়েক জনের ভাড়ার হার নিয়ে সমস্যা নেই, তাঁরা কেউ তিনতলার ঘর দিতে চান, কেউ দেখান জীর্ণ ঘর। সে সব ঘরে আবার তাঁদের কাজ হবে না। কারণ এখন ডাকসেবা নেন মূলত প্রবীণ নাগরিকরাই। তাঁদের পক্ষে তিনতলা চড়া কষ্টকর। এ ছাড়া, ডাক-ব্যাগ বহণেও সমস্যা দেখা দেবে। আরেক বাড়িমালিকের প্রস্তাব, তিনি ডাক বিভাগের চাহিদামতো নতুন ঘর তৈরি করে দিতে পারেন। কম ভাড়া নিয়েও সমস্যা নেই। কিন্তু ঘর নির্মাণের ৫০ শতাংশ ব্যয় অগ্রিম দিতে হবে। সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ডাক-কর্তারা। শুধু হাসপাতাল রোড নয়, গুরুচরণ কলেজ উপ-ডাকঘরটিকেও শীঘ্র জায়গা বদলাতে হবে। বর্তমান গৃহকর্তা ঘর ছাড়ার জন্য বলে দিয়েছেন। ঋজুবাবু বলেন, ‘‘সামান্য ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এরপরও অন্যদের কাছ থেকে এই সময়ে যে হারে ভাড়া পাবেন, সে তুলনায় অনেক কম।’’ কিন্তু বিভাগীয় দরে আচমকা বড়সড় পরিবর্তন আনা তাঁর পক্ষেও সম্ভব নয় বলে জানান ডিরেক্টর গঙ্গোপাধ্যায়।

সমস্যা রয়েছে শ্রীকোণা ডাকঘরেও। সেখানে রেল ওভারব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হতে চলেছে। বর্তমান ডাকঘর সেই নির্মীয়মান ব্রিজের একেবারে গোড়ায়। সেটি ভাঙতে হবে। গ্রামীণ এলাকা বলে সামান্য ভাড়া বাড়ালে সেখানে ঘর পেতে অসুবিধা হবে না বলেই আশা ডাকবিভাগের।

কিন্তু হাসপাতাল রোড ডাকঘর? ডিরেক্টর বলেন, ‘‘আপাতত চলুক সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডের অফিসেই।’’ আর জিসি কলেজ উপ-ডাকঘর? ‘‘এখনই বলা মুশকিল ঘরটি ছাড়লে কী হবে’’— জবাব ঋজুবাবুর।

Silchar Post Office
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy