জল্পনা শুরু হয়েছিল কয়েক মাস আগেই। শুক্রবার বিজেপি মণিপুরের সব দলীয় বিধায়ককে দিল্লিতে তলব করায় তা আরও জোরালো হল। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গোষ্ঠীহিংসা কবলিত রাজ্যে এ বার রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিয়ে বিজেপি আবার সরকার গড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে এই পদক্ষেপ দেখে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা এন বীরেন সিংহ শুক্রবার বলেন, ‘‘বিজেপির সমস্ত বিধায়করে রবিবারের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। যদিও, তাঁদের কাউকেই এই বৈঠকের আলোচ্যসূচি জানানো হয়নি। এই বৈঠক সরকার গঠনের জন্যেও হতে পারে। আমাদের অধিকাংশই দিল্লি যাচ্ছি।” মণিপুর বিজেপির সভানেত্রী শারদা দেবী বিধায়কদের সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছেন বলে জানান বীরেন। প্রসঙ্গত, ৬০ সদস্যের মণিপুর বিধানসভায় বিজেপি সদস্য সংখ্যা ৩৭। এঁদের মধ্যে ৭ জন কুকি-জ়ো জনগোষ্ঠীর।
আরও পড়ুন:
মেইতেই এবং কুকিদের সংঘর্ষের জেরে মণিপুরে ২০২৩-এর মে মাস থেকে হিংসা শুরু হয়েছিল। তার প্রায় ২১ মাস পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ইস্তফা দিয়েছিলেন। এর পরেই কেন্দ্র মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে। গত অগস্ট মাসে সংসদে বিল এনে সেই রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে। মণিপুরের বিজেপি নেতারা অবশ্য রাষ্ট্রপতি শাসন মেয়াদ বাড়ানোর বিপক্ষে ছিলেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অবস্থানে বীতশ্রদ্ধ হয়ে ইতিমধ্যেই মণিপুরের বিজেপির বেশ কয়েক জন নেতা দল ছেড়েছেন।
তবে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হলেও মণিপুরের বিধানসভা ভেঙে দেওয়া হয়নি। তা ‘সাসপেন্ডেড অ্যানিমেশন’-এ রাখা হয়েছে। যার অর্থ প্রয়োজনে এই বিধানসভা জিইয়ে ফের সরকার গঠন করা যায়। ইম্ফল উপত্যকার এনডিএ বিধায়কেরা (যাঁরা মূলত মেইতেই জনগোষ্ঠীর) রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করে নির্বাচিত সরকার গঠনের দাবি তুলেছেন। কিন্তু প্রকাশ্যেই তার বিরোধিতা করেছেন পাহাড় অঞ্চলে বসবাসকারী জ়ো-কুকি বিধায়কেরা। মেইতেই প্রাধান্য রয়েছে এমন সরকারে শামিল না হওয়ার কথা ঘোষণা করে পৃথক বিধানসভা-সহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তুলছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে রবিবারের বৈঠকে সমাধানসূত্রের খোঁজ মিলবে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।