Advertisement
০৭ মে ২০২৪
new born baby

Humanity: ২৬ দিনের শিশুকে বাঁচাতে রাত ২টোয় অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ভোপাল স্টেশনে হাজির বহু মানুষ!

শিশুটির পরিজনের আবেদন চোখে পড়ে অনেকের। তাই শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ ভোপাল  স্টেশনে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে উপস্থিত হন অনেকেই। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
ভোপাল শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৪
Share: Save:

যে শহরে গ্যাস দুর্ঘটনায় অক্সিজেন না পেরে মারা গিয়েছিলেন বহু মানুষ, কালের ফেরে সেই শহরেই একটি শিশুর প্রাণ বাঁচাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে স্টেশনে হাজির হলেন অসংখ্য মানুষ। তা-ও আবার মাঝরাতে।

শিশুটির বয়স মাত্র ২৬ দিন। ওই বয়সেই হার্টের জটিল সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে সে। চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, ভাল্ভে সমস্যায় অবিলম্বে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। নয়াদিল্লির এমসে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দিয়েছিলেন অভিভাবকদের। এর পর আর কালবিলম্ব না করে নাগপুর থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে চেপে সন্তানকে নিয়ে এমসের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু ট্রেনে ওঠার কিছু ক্ষণ পরেই তাঁরা বুঝতে পারেন, ছেলের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন সঙ্গে নেই। বন্ধুর মাধ্যমে সমাজমাধ্যমের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। সেই বার্তা দেখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অক্সিজেন নিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত হন ভোপাল স্টেশনে। প্রাণ বাঁচে শিশুটির।

সমাজমাধ্যমে শিশুটির পরিজনের আবেদন চোখে পড়েছিল অনেকের। সেই আর্তি উপেক্ষা করতে না পেরেই শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ ভোপাল স্টেশনে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে উপস্থিত হন বহু মানুষ। তবে প্রয়োজনমাফিক তিনটি সিলিন্ডার নিয়েই রাজধানীর উদ্দেশে পাড়ি দেন ওই শিশুর অভিভাবক। পরে ভোপালবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওই অসুস্থ শিশুর মা নিকিতা সাহারে। নিকিতার বয়স ২৫। তিনি জানিয়েছেন, সন্তানের ভাল্ভে সমস্যা থাকায় নাগপুরের এক চিকিৎসক দ্রুত এমসে ভর্তি করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘অস্ত্রোপচার প্রয়োজন’। এর পরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর সহায়তায় বৃহস্পতিবার বিলাসপুর-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের টিকিট জোগাড় করেন তাঁরা। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ নাগপুর থেকে সন্তানকে নিয়ে ট্রেনে ওঠেন ওই দম্পতি। কিছুটা পথ পেরোনোর পরে নজরে আসে, পর্যাপ্ত অক্সিজেন নেই।

এর পরেই নিকিতার স্বামী প্রবীণ তাঁর বন্ধু খুশরু ইয়োচার সঙ্গে যোগাযোগ করে সাহায্য চান। ভোপালের কিছু সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি ইয়োচা সমাজমাধ্যমেও ওই পরিবারের সাহায্যের জন্য আবেদন জানান। রেলের আধিকারিকদেরও নাম জুড়ে দেওয়া হয় সেই পোস্টে। রেলের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান (ভোপাল) উদয় বরওয়ানকরের কাছেও সাহায্য চান ইয়োচা। উদয়ই আধঘণ্টার মধ্যে শিশুটির বাবা প্রবীণকে ফোন করে জানান, ভোপাল স্টেশনে পর্যাপ্ত অক্সিজেনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে প্রবীণ-নিকিতার আবেদন। সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষও অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গভীর রাতে ভোপাল স্টেশনে উপস্থিত হন। রেল ও অর্থ দফতরের আধিকারিকেরাও তত ক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন স্টেশনে। রাত ২টো নাগাদ রাজধানী এক্সপ্রেস পৌঁছতেই এত মানুষকে দেখে চমকে যান প্রবীণ-নিকিতা। সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

new born baby Bhopal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE