E-Paper

আহতদের রক্ত দিতে হাসপাতালে ছুটেছেন শহরের মানুষ

আমদাবাদে এমনিতে দিনের বেলা এই সময়ে গরম এমন যে বাইরে বেরনো কঠিন। খুব প্রয়োজন না থাকলে এখানকার বাসিন্দাদের কেউ খুব একটা এই সময়ে বাইরে বেরোন না।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রাজদীপ দে (কলেজ শিক্ষক)

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫ ০৯:১৬
Share
Save

তখনও বিমান দুর্ঘটনার খবর লোকমুখে ছড়ায়নি। গরমের দুপুরে ফাঁকা রাস্তায় আচমকাই একের পর এক অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের আওয়াজ। প্রথমে আশপাশে কোনও দুর্ঘটনা হয়েছে ভেবেছিলাম। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে বিমান ভেঙে পড়ার খবর আসতেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসি। আমার মতো অনেকেই আতঙ্ক এবং উৎকণ্ঠা নিয়ে এস জি হাইওয়ের দু’পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ বেশি ক্ষণ থাকতে দেয়নি। দ্রুত সবাইকে সরিয়ে রাস্তায় দু’পাশ সবুজ কাপড় দিয়ে ঘিরে দেয়।

আমার ফ্ল্যাট থেকে ঠিক ৯ কিলোমিটার দূরে বিমানটি ভেঙে পড়ে। ভেঙে পড়ার অল্প কিছু সময় পরে অর্থাৎ দুপুর দুটোর আশেপাশের সময় থেকে শহরের চেনা ছন্দটাই বদলে যায় এক মুহূর্তে। অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেনের তীব্র শব্দে এখানকার বাসিন্দারা প্রতি মুহূর্তে যেন কেঁপে উঠেছেন।

আমদাবাদে এমনিতে দিনের বেলা এই সময়ে গরম এমন যে বাইরে বেরনো কঠিন। খুব প্রয়োজন না থাকলে এখানকার বাসিন্দাদের কেউ খুব একটা এই সময়ে বাইরে বেরোন না। শহর অনেকটাই ঝিমিয়ে থাকে। এ দিনের দুপুর দেখে যদিও আর পাঁচটা দিনের মতো মনে হয়নি। সকলেই যে যার মতো করে ভাবছিলেন যদি কোনও ভাবে কিছু সাহায্য করা যায়! সমাজমাধ্যমে, ওয়টস্যাপ-এ রক্তদান কর্মসূচির কথা ছড়াতে থাকে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। দুর্ঘটনায় আহতদের রক্ত দিতে শহরের মানুষ এক মুহূর্ত ভাবেননি। অনেকেই ছুটেছেনহাসপাতালের দিকে।

গান্ধীনগরে এস জি হাইওয়ে দিয়ে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত, আহতদের অনেককে অ্যাম্বুল্যান্সে করে সোলা সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। একটা সময়ে এই রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্সের চাপ এতটা বেড়ে যায় অন্যান্য গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাস্তায় দু’পাশ ছিল পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। কেউ রাস্তার ধারে গিয়ে দাঁড়ালেই বাঁশি বাজিয়ে, অথবা লাঠি উঁচিয়ে পুলিশকর্মীরা তেড়ে এসেছেন। কয়েক মিনিট অন্তর শুধু এই রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াত করেছে। কোনও অ্যাম্বুল্যান্স সাইরেন বাজিয়ে হাসপাতালের দিকে ছুটেছে, কোনওটি আবার হাসপাতাল থেকে দ্রুত ছুটেছে দুর্ঘটনাস্থলের দিকে। এই দৃশ্য আগে কোনও দিন দেখা যায়নি এখানে। যতদেখছিলাম ততই উৎকণ্ঠার সঙ্গে আতঙ্কও গ্রাস করছিল।

বিকেল চারটের পর রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স সংখ্যা কমতে শুরু করে। অন্যান্য গাড়িও নামে এসজি হাইতে। রাস্তায় ফেরে অফিস ফেরত গাড়ির ভিড়। কিন্তু শহর এখনও স্বাভাবিক হয়নি। কয়েক মুহূর্তে এতগুলো মানুষ স্রেফ ‘নেই’ হয়ে গিয়েছেন এ শহরে। এই ভার সহজে হালকা হওয়ার নয়।

(অনুলিখন: চন্দন বিশ্বাস)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ahmedabad

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।