তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই কেন পাইলটদের দোষারোপ? অহমদাবাদের বিমান বিপর্যয়ের ঘটনায় আমেরিকার একটি রিপোর্ট নিয়ে এই প্রশ্ন তুলল ভারতের বিমানচালকদের আরও এক সংগঠন দ্য ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া পাইলট্স (এফআইপি)। বুধবার ওই সংগঠনের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “সবিস্তার, স্বচ্ছ এবং তথ্যনির্ভর তদন্তের আগেই দোষ চাপিয়ে দেওয়া দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। ধারণার বশবর্তী হয়ে মন্তব্য করা উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন বিমানকর্মীদের পেশাদারিত্বকে খাটো করে এবং তাঁদের পরিবার এবং সহকর্মীদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়।”
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ আমেরিকার বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনার জন্য প্রকারান্তরে পাইলটদের দায়ী করে। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ‘ব্ল্যাক বক্স’-এর রেকর্ডিং উদ্ধৃত করে বলা হয়, বিমানের জ্বালানি সুইচ আচমকা ‘রান’ (চালু) থেকে ‘কাটঅফ’-এ (বন্ধ) চলে গিয়েছিল। পাইলটদের মধ্যে এক জন অপরকে প্রশ্ন করছেন, “কেন তুমি বন্ধ করে দিলে?” অপর জন উত্তর দেন, “আমি করিনি।” খুব শান্ত ভাবেই উত্তরটি দেওয়া হয় বলে দাবি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। প্রসঙ্গত, সে দিন বিমানটি চালাচ্ছিলেন সুমিত সবরওয়াল, যাঁর ১৫,৬৩৮ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। সহকারী পাইলট হিসাবে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর, যাঁর নিজেরও ৩,৪০৩ কিলোমিটার বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল।
বিমান দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে তদন্তকারী সংস্থা ‘এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’র (এএআইবি) প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট শনিবার প্রকাশ্যে আসে। সেই রিপোর্টেও বলা হয়, বিমানটি যখন গতি নিয়ে নিয়েছে, ঠিক সেই সময়ে দু’টি ইঞ্জিন মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে পর পর বন্ধ হয়ে যায়। জ্বালানির সুইচ ‘রান’ (চালু) থেকে ‘কাটঅফ’-এ (বন্ধ) চলে গিয়েছিল। কী ভাবে এক সেকেন্ডের মধ্যে জ্বালানির সুইচ ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’ হয়ে যায়, তার কোনও সম্ভাবনার কথা প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি।
১৫ পাতার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে এর আগে প্রশ্ন তুলেছিল বিমানচালকদের একাধিক সংগঠন। ‘এয়ারলাইন পাইলট্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’ তদন্তপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “তদন্তের ভঙ্গি এবং অভিমুখ একতরফা ভাবে পাইলটদের ত্রুটির দিকে ইঙ্গিত করছে। আমরা আগে থেকে এমন কিছু ধরে নেওয়ার বিরোধিতা করছি। আমরা চাই একটি ন্যায্য, তথ্যভিত্তিক তদন্ত হোক।” তদন্তপ্রক্রিয়ায় কেন এত রাখঢাক রাখা হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে সংগঠনটি।