Advertisement
E-Paper

সোমে ফ্রান্সে যাচ্ছেন মোদী, বুধবার আমেরিকায়! শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের আশ্বাস কি আদায় করতে পারবেন?

প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প শপথ নেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সে দেশে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা দু’দেশের সুসম্পর্কের প্রতিফলন। ১৩ ফেব্রুয়ারি দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক হতে চলেছে।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৩২
Share
Save

পর পর দু’দেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার ফ্রান্সের উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি। বুধবার সেখান থেকে যাবেন আমেরিকায়। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন, শুল্কনীতির পাশাপাশি উঠতে পারে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও! প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী।

শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর এ বারের সফরের সূচি ঘোষণা করেছেন বিক্রম। তিনি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প শপথ নেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সে দেশে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যা দু’দেশের সুসম্পর্কের প্রতিফলন। ১৩ ফেব্রুয়ারি দুই রাষ্ট্রনেতার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হতে চলেছে।

অন্য দিকে, দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অবৈধবাসীদের যার যার দেশে ফেরত পাঠাতে তৎপর হয়েছেন ট্রাম্প। প্রথম দফায় ফেরানো হয়েছে ১০৪ জন অবৈধবাসী ভারতীয়কে। সঙ্গে পড়শি মেক্সিকো, কানাডা এবং আমেরিকার বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী চিনের বিরুদ্ধে নতুন শুল্কনীতি প্রয়োগের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে জাপানকেও।

ট্রাম্পের পরবর্তী নিশানা কারা হবে, এখন তা নিয়েই জল্পনা চলছে বিশ্ব জুড়ে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই তালিকায় রয়েছে ভারতের নামও! কারণ, আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট যে দেশগুলির পণ্যের উপর বাড়তি শুল্ক বসিয়েছেন, তাদের সকলের সঙ্গেই বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে ওয়াশিংটনের। ঘটনাচক্রে, ভারতের ক্ষেত্রেও রয়েছে ঘাটতি। তবে এখনও ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর ব্যাপারে মুখ খোলেননি ট্রাম্প। সেই আবহে মোদী কি পারবেন শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের আশ্বাস আদায় করতে? মোদীর আমেরিকা সফর ঘিরে তাই জল্পনা তুঙ্গে।

ভারত ইতিমধ্যেই কিছু দামি মার্কিন পণ্যের উপর আমদানি কর ছাড়ের ঘোষণা করেছে। অনেকে এই সিদ্ধান্তকে ট্রাম্পকে ‘তুষ্ট রাখার চেষ্টা’ বলে মনে করছেন। কারণ, প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকার সময় মোদীর সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব’ সত্ত্বেও কিছু ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে সই করেছিলেন ট্রাম্প। এই দফাতেও তেমন কিছু হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিবিসির রিপোর্ট, ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে গত মাসে মোদীর যে কথা হয়েছে, তাতে আরও বেশি অস্ত্র কেনার চাপ ভারতকে দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এবং দু’দেশের আমদানি-রফতানির ‘ভারসাম্য’ বৃদ্ধির কথাও বলেছেন।

বৈঠকে নানা প্রসঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদেশসচিব। বিক্রমের কথায়, ‘‘আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারব না যে বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হবে, তবে এই প্রসঙ্গ ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ সম্প্রতি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল ভাষণের পর মুজিবুর রহমানের বাসভবনে ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে বিদেশসচিব বলেন, ‘‘কূটনৈতিক প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ সরকার তাদের এই দায়িত্ব সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।’’

মিস্রী জানিয়েছেন, আমেরিকা সফরের আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরোঁর আমন্ত্রণে ফ্রান্স যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ম্যাকরোঁর এলিসি প্যালেসে নৈশভোজে অংশ নেবেন মোদী। এর পর ১১ তারিখ ম্যাকরোঁর সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ক শীর্ষবৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন মোদী। ফ্রান্সে দু’দিন কাটানোর পর ১২ ফেব্রুয়ারি রওনা দেবেন আমেরিকার উদ্দেশে। প্রধানমন্ত্রীর এ বারের আমেরিকা সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণও বটে। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করা পর এটিই দু’জনের প্রথম বৈঠক হতে চলেছে। শপথগ্রহণের এক সপ্তাহের মাথায় গত ২৭ জানুয়ারি মোদীকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক নিয়ে দু’জনের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল। তার পরের দিনই ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারিতেই মোদীর সঙ্গে বৈঠক হতে পারে তাঁর। অন্য দিকে, ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথোপকথনের কথা জানিয়ে এক্স পোস্টে মোদী লিখেছিলেন, ‘‘তাঁর ঐতিহাসিক দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য অভিনন্দন জানালাম। আমরা আমাদের জনগণের কল্যাণে এবং বিশ্বের শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার জন্য একসঙ্গে কাজ করব।’’ মোদী-ট্রাম্প সম্পর্ক ব্যক্তিগত স্তরেও বেশ মসৃণ। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্পের শেষ বিদেশ সফরও ছিল ভারতে। ২০১৬-২০ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন ট্রাম্প বারে বারেই মোদীকে ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ বার তাই দুই ‘বন্ধু’র বৈঠকের দিকে তাকিয়ে বিশ্ব।

Narendra Modi US USA Donald Trump India-US Relationship Tariff Illegal Immigrants Bangladesh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}