তুঙ্গভদ্রা নদীর তীরে নির্জন জায়গায় এক ইজ়রায়েলি তরুণী-সহ দু’জনকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের সঙ্গে থাকা এক জনকে খুনের অভিযোগও উঠেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ শনিবার দুই জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে এখনও তৃতীয় অভিযুক্ত অধরা। তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় ধৃতেরা ওই অভিযুক্তের নাম ও পরিচয় জানিয়েছেন। সেই সূত্র ধরেই তৃতীয় অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কর্নাটকের হাম্পির কাছে কোপ্পালে তুঙ্গভদ্রা নদীর একটি খালের ধারে গিয়েছিলেন ওই ইজ়রায়েলি তরুণী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় হোম স্টে-র মালকিন এবং আরও তিন পর্যটক। তাঁদের কেউ মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা, কেউ ওড়িশার, কেউ আবার থাকেন সুদূর আমেরিকায়। তুঙ্গভদ্রার তীরে দাঁড়িয়ে রাতের শোভা উপভোগ করছিলেন সকলে। অভিযোগ সেই সময়েই স্থানীয় তিন জন তাঁদের উপর হামলা চালান। গণধর্ষণ করা হয় দুই তরুণীকে (এক জন স্থানীয় হোম স্টে-র মালকিন)। তিন যুবককে মারধর করা হয়। ওই তিন যুবকের মধ্যে এক জন বৃহস্পতিবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার সকালে তুঙ্গাভদ্রার ওই খাল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন:
বেঙ্গালুরু থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে কোপ্পালে ঘুরতে গিয়েছিলেন আমেরিকার ড্যানিয়েল এবং ইজ়রায়েলের ওই তরুণী। একই হোম স্টে-তে উঠেছিলেন মহারাষ্ট্রের পঙ্কজ এবং ওড়িশার বিভাস। একই সঙ্গে থাকতে থাকতে সকলের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। ঠিক হয়, বৃহস্পতিবার রাতে তুঙ্গভদ্রা নদীর খালের ধারে যাবেন সকলে। নিঝুম রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করাই উদ্দেশ্য ছিল তাঁদের। ওই চার জনের সঙ্গী হন হোম স্টে-র মালকিনও। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকাই স্থানীয় তিন যুবক বাইকে করে ওই খালের ধারে আসেন। অভিযোগ, প্রথমে ওই যুবকেরা পর্যটকদের থেকে জানতে চান, কাছাকাছি কোথায় পেট্রল পাম্প আছে। তার পর হঠাৎই তাঁরা ১০০ টাকা দাবি করেন। কেন ১০০ টাকা দেবেন, সেই প্রশ্ন তোলেন পর্যটকদের মধ্যে থাকা এক যুবক। এই নিয়ে ওই তিন যুবকের সঙ্গে বচসা বাধে। অভিযোগ, এর পরেই বাইক থেকে নেমে পর্যটকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন তিন জন। বেধড়ক মারধর করা হয় আমেরিকান যুবককে। বাকিরাও মার খান। শুধু তা-ই নয়, পঙ্কজ, ড্যানিয়েল এবং বিভাসকে ধাক্কা দিয়ে খালে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পঙ্কজ এবং ড্যানিয়েল সাঁতার জানতেন বলে সাঁতরে পাড়ে উঠে আসেন। তবে খাল থেকে উঠতে পারেননি বিভাস। শনিবার তাঁরই দেহ উদ্ধার হয়। পাশাপাশি, ওই ইজ়রায়েলি তরুণী এবং হোম স্টে-র মালকিনকে গণধর্ষণ করা হয় বলেও অভিযোগ।
তদন্তে নেমে পুলিশ দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। কোপ্পালের পুলিশ সুপার রাম আরাসিদ্দি জানান, ধৃতেরা দু’জনেই গঙ্গাবতী শহরের বাসিন্দা। তৃতীয় অভিযুক্তও সেই এলাকার বাসিন্দা। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা।