মেঘালয় হত্যাকাণ্ডের রহস্যের পর্দা একটু একটু করে উঠছে। প্রাথমিক তদন্তে একাধিক তথ্যসূত্র হাতে পেয়েছে পুলিশ। যেমন পুলিশ জানতে পেরেছে, স্বামী রাজা রঘুবংশী খুন হওয়ার পরে একাই অসমের গুয়াহাটি চলে গিয়েছিলেন সোনম। সেখান থেকে তিনি যান উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরে।
সোনমের ‘প্রেমিক’ রাজ কুশওয়াহার গতিবিধি সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। গোটা পর্বে তাঁর ভূমিকা প্রথম থেকেই তদন্তকারীদের আতশকাচের তলায়। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। পুলিশ জানতে পেরেছে, রাজার শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান থেকে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, জামাইয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়া সোনমের পিতা দেবী সিংহের সঙ্গেই ছিলেন রাজ। শুধু তা-ই নয়, সংবাদ সংস্থা পিটিআই লক্ষ্মণ সিংহ রাঠৌর নামের এক প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, সোনমদের পরিবারের সদস্যেরা চার-পাঁচটি গাড়িতে চেপে রাজার শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছিলেন। একটি গাড়ি চালাচ্ছিলেন রাজ। গোটা রাস্তায় তাঁকে কোনও কথা বলতে শোনেননি কেউই।
আরও পড়ুন:
পুলিশ তদন্তে নেমে এ-ও জানতে পেরেছে যে, মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে বসেই খুনের ছক কষে ফেলেছিলেন রাজ। সোনমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন তিনি। তাঁকে যাতে কেউ সন্দেহ না-করে, সেই কারণেই তিনি এই কৌশল নিয়েছিলেন বলে মনে করছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডে রাজ ছাড়াও বিশাল চহ্বাণ, আকাশ রাজপুত এবং আনন্দ কুর্মি নামের তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ইনদওরে বসেই এই তিন জনকে দিয়ে হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করেছিলেন রাজ। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিসি (অপরাধ) রাজেশ দান্ডোতিয়া ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে বলেছেন, “তিন অভিযুক্ত মধ্যপ্রদেশ থেকে বিহার গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ট্রেনে গুয়াহাটি পৌঁছোন। তার পর তাঁরা মেঘালয়ে যান।”
অন্য দিকে, পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে বিন্দুমাত্র সহযোগিতা করছেন না সোনম। প্রশ্নের উত্তর এড়াচ্ছেন তো বটেই, কিছু খেতেও চাইছেন না। যে কোনও প্রশ্নে তাঁর বাঁধাধরা উত্তর একটিই। তা হল, “আমার খুব মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে। আমি ঘুমোতে পারছি না।” ইতিমধ্যেই মেঘালয় পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে সোনমকে। রবিবারই সড়কপথে উত্তরপ্রদেশ থেকে বিহার নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁকে। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, সকাল ১১টা নাগাদ পটনা বিমানবন্দর থেকে বিমানে সোনমকে নিয়ে গুয়াহাটি রওনা দেবেন তদন্তকারীরা।