Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Policy Commission

একশো দিনের কাজে জোর নীতি আয়োগের

করোনার সংক্রমণের প্রথম ধাক্কার প্রভাব মূলত শহরে সীমাবদ্ধ থাকলেও দ্বিতীয় ধাক্কায় তা বড় শহরের সীমানা অতিক্রম করে শহরতলি ও গ্রামীণ ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২১ ০৭:১৯
Share: Save:

করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা শহর থেকে ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামেও। সংক্রমণ ঘরে-ঘরে। তবুও কৃষিক্ষেত্রে তার কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই আজ দাবি করলেন নীতি আয়োগের সদস্য (কৃষি) রমেশ চাঁদ। উল্টে তাঁর দাবি, ভাল বর্ষার সম্ভাবনা থাকায় চলতি আর্থিক বছরে (২০২১-২২) কৃষি ক্ষেত্রে বৃদ্ধি হবে ৩ শতাংশের বেশি। একই সঙ্গে করোনার কারণে যাতে গ্রামীণ অর্থনীতি ধাক্কা না খায় এবং লোকের হাতে নগদের জোগান থাকে, তার জন্য একশো দিনের কাজের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারকে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন নীতি আয়োগের ওই কর্তা।

করোনার সংক্রমণের প্রথম ধাক্কার প্রভাব মূলত শহরে সীমাবদ্ধ থাকলেও দ্বিতীয় ধাক্কায় তা বড় শহরের সীমানা অতিক্রম করে শহরতলি ও গ্রামীণ ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। বড় শহরগুলিতে প্রায় দেড় মাসের বেশি লকডাউনে পরিযায়ী মজুরদের গ্রামে ফিরে যাওয়া সেই সংক্রমণকে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। করোনা কারণে গত বছর অর্থনীতির সঙ্কোচন হয়েছিল। এ বছর ১০ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস থাকলেও বিভিন্ন রাজ্যের বিধিনিষেধের জেরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মনে করছে সেই বৃদ্ধি ততটা না-ও হতে পারে। লকডাউনের কারণে জিডিপি যে কমবে, তাতে সন্দেহ ছিল না কারওরই। এই পরিস্থিতিতে কারখানার উৎপাদন, নির্মাণ ক্ষেত্র সঙ্কোচনের মুখ দেখলেও গত বারে সরকারের মুখ রক্ষা করেছিল কৃষিক্ষেত্র। এ বারেও কৃষিক্ষেত্রের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হারে হবে বলে সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন রমেশ। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, শহরাঞ্চলে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা মার্চ-এপ্রিল মাসে দেখা গিয়েছিল। সেই সংক্রমণের ঢেউ গ্রামীণ ভারতে পৌঁছয় মে মাসে। সেই সময়ে গ্রামে কৃষি কাজ প্রায় হয় না বললেই চলে। রমেশের দাবি, মে মাসে যে হেতু দেশের প্রায় সর্বত্রই প্রচণ্ড গরম থাকে, সে কারণে সাধারণত শস্য বোনা বা ফসল কাটার কাজ বন্ধ থাকে। সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি অর্থাৎ গরমের শুরু পর্যন্ত কৃষিকাজ করে থাকেন কৃষকেরা, তার পর দাবদাহ শুরু হতেই তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের বর্ষা এলে কৃষিকাজে নামেন কৃষকেরা। মাঝের ওই সময়ে কেবল শাক-সব্জি চাষ করে থাকেন কৃষকেরা। তাই যে হেতু গ্রামীণ ভারতে মে মাসে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তাই খাদ্যশস্য উৎপাদনের প্রশ্নে সেই অর্থে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই মত তাঁর। তবে ওই সংক্রমণ মে-র পরিবর্তে একমাস আগে বা পরে হলে কৃষিতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল বলেই মত নীতি আয়োগের ওই কর্তার। তাঁর দাবি, বিভিন্ন মান্ডিগুলিতে ফি দিনের ব্যবসা প্রমাণ করে দিয়েছে, কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে শহরে লকডাউনের কারণে পরিযায়ী মজদুরদের গ্রামে ফিরে যাওয়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে নগদ অর্থের সরবরাহে ধাক্কা দিতে পারে বলে কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন নীতি আয়োগের ওই কর্তা।
তাঁর কথায়, এখন পর্যন্ত যা তথ্য রয়েছে, তাতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে সেই অর্থে কোনও নেচিবাচক প্রভাব পড়েনি। কিন্তু শ্রমিকদের করোনার ভয়ে গ্রামে চলে যাওয়ায় শহর থেকে গ্রামে যে টাকা পৌঁছত, তাতে ধাক্কা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যাঁরা শহর থেকে গ্রামে যাচ্ছেন, তাঁদের একশো দিনের কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ করে দিতে হবে। যাতে তাঁদের হাতে নগদ অর্থের জোগান থাকে। তবেই গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা থাকবে বলেই তাঁর অভিমত। তাই একশো দিনের কাজের আরও বেশি সুযোগ করার পক্ষে সওয়াল করেছেন নীতি আয়োগের ওই কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

100 days work Policy Commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE