E-Paper

চিঠি-পার্সেল খুলতে পারবেন ডাককর্মীরা, আসছে নয়া আইন

বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, ‘পাবলিক সেফটি’, ‘পাবলিক এমার্জেন্সি’-র মতো পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসারদের এই ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৪৭
india post

সোমবার রাজ্যসভায় বিলটি পাশ হয়ে গিয়েছে। —ফাইল চিত্র।

এখন থেকে ডাকঘরের কর্মীরা সন্দেহ হলে আপনার পাঠানো বা আপনার নামে আসা পার্সেল খুলে দেখতে পারবেন। সন্দেহ হলে শুল্ক দফতর বা পুলিশের কাছে সেই পার্সেল পাঠিয়েও দিতে পারবেন। নতুন ডাকঘর বা পোস্ট অফিস আইন এনে ডাকঘরের অফিসারদের হাতে এই ক্ষমতা তুলে দিতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, এর ফলে ভারত নজরদার রাষ্ট্র বা ‘সার্ভেল্যান্স স্টেট’ হওয়ার পথে আরও এক পা এগিয়ে গেল। মোদী সরকার ব্রিটিশ আমলে তৈরি ১৮৯৮ সালের ইন্ডিয়ান পোস্ট অফিস আইন তুলে দিয়ে নতুন আইন তৈরি করতে সংসদে পোস্ট অফিস বিল পেশ করেছে। আজ রাজ্যসভায় সেই বিল পাশ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস, তৃণমূল থেকে বাম, আম আদমি পার্টির সাংসদেরা অভিযোগ তুলেছেন, মোদী সরকার সব কিছুতেই নজরদারি করতে চাইছে।

কংগ্রেসের শক্তিসিন গোহিল, তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায় আজ রাজ্যসভায় অভিযোগ তুলেছেন, মোদী সরকারের পোস্ট অফিস বিলের ৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে ডাকঘরের অফিসারেরা কোনও পার্সেল আটক করতে পারেন। তা খুলে দেখতে পারেন। প্রয়োজনে তা শুল্ক দফতর বা নিরাপত্তা সংস্থার কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন। আবার নষ্টও করে ফেলতে পারেন। এই ধারা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরুদ্ধে। দেশের নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে কেন্দ্র নজরদারির ব্যবস্থা করতে চাইছে। সুখেন্দুশেখর বলেন, ‘‘পেগাসাসের পরে পোস্টাল বিল সরকার এনে গণতান্ত্রিক দেশটিকে নজরদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।’’ কংগ্রেসের গোহিল বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত পরিসরের অধিকারকে সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের তকমা দিয়েছে। কিন্তু সেখানেই হস্তক্ষেপ হচ্ছে।’’

বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেন, ‘পাবলিক সেফটি’, ‘পাবলিক এমার্জেন্সি’-র মতো পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসারদের এই ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। এ সব শব্দের সংজ্ঞা বলা নেই। কোন স্তরের অফিসারদের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের অফিসারদের হাতেও এই ক্ষমতা থাকবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। যদি ডাকঘরের কর্মীদের হাতে পার্সেল খুলে দেখা, তা নষ্ট করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকে, তা হলে ডাকপিওনদের প্রতি মানুষের যে আস্থা ছিল, তা নষ্ট হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব অবশ্য যুক্তি দেন, এখনকার সময় ও পরিস্থিতি যে রকম কঠিন হয়ে উঠেছে, তাতে এই ধরনের নজরদারি জরুরি। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

India Post Central Government PM Narendra Modi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy