এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যুর চার বছর পর তাঁর অধ্যাপক স্বামীকে গ্রেফতার করল চণ্ডীগড় পুলিশ। ফরেন্সিক পরীক্ষায় খুনের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ার পরেই এই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতের নাম বিবি গয়াল। তিনি পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। সোমবার রাতে নিজের বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে ওই প্রৌঢ়কে।
২০২১ সালের ৪ নভেম্বর দীপাবলির রাতে ঘটনাটি ঘটে। ওই দিন পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হয় ৬০ বছরের সীমা গয়ালের দেহ। মৃতদেহের হাত-পা কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল। ময়নাতদন্তে জানা যায়, ওই মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তবে বাইরে থেকে জোর করে ঘরে ঢোকার কোনও চিহ্ন ছিল না। ফলে শুরু থেকেই মৃতার অধ্যাপক স্বামীর উপর সন্দেহ হয় পুলিশের। তবে, ঘটনাস্থলে কোনও আঙুলের ছাপ ছিল না, মিলছিল না ডিএনএ নমুনা। খুনের কোনও অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি। এমনকি, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজেও সন্দেহজনক কিছুই চোখে পড়েনি। ফলে কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ না থাকায় অধ্যাপককে গ্রেফতার করতে পারছিলেন না তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন:
অভিযুক্ত তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছিলেন, ঘটনার আগের রাতে তিনি ও তাঁর স্ত্রী আলাদা ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। পর দিন সকালে উঠে তিনি দেখেন, মূল দরজাটি বাইরে থেকে তালাবন্ধ। ওই অধ্যাপকের আরও দাবি ছিল, পাশের ঘরে গিয়ে স্ত্রীকে মৃত অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। যদিও অধ্যাপকের বয়ান পুরোপুরি বিশ্বাস করেনি পুলিশ। সাধারণ ময়নাতদন্তে কিছু না পাওয়া গেলে সন্দেহভাজনদের মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেন তদন্তকারীরা। অধ্যাপক ও তাঁর মেয়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানো হয়। হয় ব্রেন ইলেকট্রিক্যাল অসিলেশন সিগনেচার (বিইওএস) প্রোফাইলিং ম্যাপিং পরীক্ষাও। তাতে জানা যায়, খুনের নেপথ্যে ছিলেন ওই অধ্যাপক নিজেই। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, খুনের আগের রাতে ওই দম্পতির মধ্যে কোনও কারণ নিয়ে তীব্র বচসা হয়। সম্ভবত তার জেরেই স্ত্রীকে খুন করেন ওই ব্যক্তি। চণ্ডীগড়ের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ (এসএসপি) কানওয়ারদীপ কৌর সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে জানিয়েছেন, অভিযুক্তের মস্তিষ্কের বিইওএস প্রোফাইলিং পরীক্ষার পর চার বছর পুরনো ওই খুনের মামলার কিনারা করা গিয়েছে। জেরায় স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ওই বৃদ্ধ। পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত অধ্যাপককে বরখাস্ত করা হবে। দোষী সাব্যস্ত হলে বাতিল হবে চাকরিও।