—ফাইল চিত্র।
লোকসভায় ‘জ়িরো আওয়ার’ চলছিল তখন। আচমকাই গ্যালারি থেকে সভায় ঝাঁপ দেন দু’জন। ঝাঁপ দিয়েই হাতে থাকা রং-বোমা (স্মোক ক্যান) সভার ভিতরে ছুড়ে দেন তাঁরা। মুহূর্তের মধ্যে হলুদ ধোঁয়ায় কক্ষ ভরে যায়। হুলস্থুল বেধে যায় লোকসভার ভিতরে। সেই সময় স্লোগান দিতে থাকেন দুই হানাদার— ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’। বুধবার এই ঘটনা ২২ বছর আগে সংসদ হামলার স্মৃতিকে উস্কে দিয়েছে। ঘটনাচক্রে, ২০০১ সালেও এই দিনে হামলা চলেছিল সংসদে। বুধবারের হামলায় অভিযুক্ত দুই হানাদারকে ইতিমধ্যেই ধরা হয়েছে। আইনমহলের একাংশের দাবি, দোষ প্রমাণিত হলে তাঁদের যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ধৃতেরা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি ও বেকারত্ব নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। সেই রকমই স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু যে ভাবে লোকসভার ভিতরে ঢুকে রং বোমা ছুড়েছেন, তা ‘দেশদ্রোহের’ শামিল বলে দাবি আইনজীবীদের একাংশের। ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ‘দেশদ্রোহের’ মামলা দেওয়া হলেও হতে পারে। দিল্লি হাই কোর্টের আইনজীবী কেকে মানান জানান, দুই হানাদারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারায় মামলা হতে পারে। তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড!
লোকসভার ভিতরে রং বোমা ছোড়ার অভিযোগে যে দু’জন ধরা পড়েছেন, তাঁদের পরিচয় জানা গিয়েছে। এক জন অমল শিন্ডে। তাঁর বাড়ি মহারাষ্ট্রে। অন্য জনের নাম নীলম সিংহ। তিনি হরিয়ানার বাসিন্দা বলে খবর। দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন সাগর শর্মা নামে এক জন। তিনিই পুরো ঘটনায় ‘নেতৃত্ব’ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, সাগর একটি ভিজিটর পাস জোগাড় করেন বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিমহার অতিথি বলে। তাঁরই সঙ্গে নীলম কৌর নামে আরও এক জন সংসদে ঢোকার চেষ্টা করেন। সাগর ও নীলমকেও আটক করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে সংসদে তখন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বক্তৃতা করছিলেন। আচমকা দেখা যায়, দুই যুবক সভার মাঝে লাফিয়ে পড়েন। বেঞ্চের উপর উঠে দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁরা। সাংসদেরাও আসন ছেড়ে উঠে পড়েন। দুই যুবক তখন স্লোগান দিতে দিতে হলুদ রঙের গ্যাস ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে দুই যুবককে আটকান দু’জন সাংসদ। এক জন আরএলপি এবং আর এক জন বিএসপির সাংসদ। এই ঘটনা নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম জানান, তিনি প্রাথমিক ভাবে ভেবেছিলেন দর্শক গ্যালারি থেকে কেউ পড়ে গিয়েছেন। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যক্তি লাফ দেওয়ার পরে তিনি বুঝতে পারেন নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে কেউ ঢুকে পড়েছেন। তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “দুই যুবক গ্যালারি থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তাঁরা এমন কিছু একটা ছুড়েছিলেন যা থেকে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। আমাদের দুই সাংসদের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের বার করে নিয়ে যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy