E-Paper

দুর্নীতি! দূতাবাসে অডিট চালু করার পরামর্শ পিএসি-র

প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাবটি আরও কড়া ভাষায় ছিল। বলা হয়েছিল, মানুষের করের টাকা লজ্জাহীন ভাবে অপব্যবহার করায় কমিটি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৫ ১০:২৫
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সাধারণ মানুষের করের টাকার নয়ছয় হয়েছে ব্রিটেন-সহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাস ও হাই কমিশনের দফতরগুলিতে— এই দাবি করে সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি) চলতি সপ্তাহে বৈঠকে বসে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, অবিলম্বে দূতাবাসগুলির খরচ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব নিতে বিশেষ অডিট চালু করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও শুরু করে দেওয়া হোক।

সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাবটি আরও কড়া ভাষায় ছিল। বলা হয়েছিল, মানুষের করের টাকা লজ্জাহীন ভাবে অপব্যবহার করায় কমিটি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে মন্ত্রক (বিদেশ) সমস্ত দূতাবাস ও হাই কমিশনের বিশেষ অডিট শুরু করুক। রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকের ভিতরে এই প্রস্তাবে আপত্তি তোলেন পিএসি-র সদস্য, বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি বলেন, এমন শব্দ ব্যবহার করা ঠিক নয়, তা হলে দেশের বাইরে ভারতের ভাবমূর্তি খারাপ হবে। তা ছাড়া ১৫০টিরও বেশি দেশে ভারতের মিশন রয়েছে। প্রত্যকটির বিশেষ অডিট করা সম্ভব নয়। এর পরে ‘লজ্জাহীন ভাবে’ কথাটি বাদ দেওয়া হয়। পাশাপাশি অডিটের ক্ষেত্রে লেখা হয়, ‘বাস্তবসম্মত ভাবে’ যতগুলি দেশে করা সম্ভব।

ব্রিটেনে ভারতের হাই কমিশন লন্ডন হাউসের একটি আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে গত বছরই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল করেছিল পিএসি। ২০১৬ সালে কোনও কারণে কোনও একটি নির্মাণ সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা একটি বেসরকারি অ্যাকাউন্টে জমা করে দূতাবাস। ওই টাকার হিসাব বিদেশ মন্ত্রককে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আবার ওই বছরই বেসমেন্ট মেরামতির জন্য ৬ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকার বরাত (ইন্ডিয়া হাউসের) দেওয়া হয় স্থানীয় সংস্থাকে, বিদেশ মন্ত্রককে না জানিয়েই। ছোট ছোট অংশে এই বরাত দেওয়া হয়, যাতে সরকারি ভাবে দরপত্র দেওয়াকে এড়িয়ে যাওয়া যায় এবং মন্ত্রকের অনুমোদন নিতে না হয়। পিএসি বিষয়টি খতিয়ে দেখে মন্ত্রককে বলে, এর মধ্যে আর্থিক অনিয়ম রয়েছে। সংশ্লিষ্ট অফিসারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চালু করা হোক। বিষয়টি নিয়ে যে ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ মন্ত্রক জমা দেয় পিএসি-তে, তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে ফের পিএসি কিছু প্রশ্নের লিখিত উত্তর চায়। সম্প্রতি বৈঠকে এই উত্তরের ভিত্তিতে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। প্রতি চার মাসে অডিট করতে বলা হয়েছিল, কিন্তু মন্ত্রকের পক্ষ থেকে তা করা হয়নি বলে মনে করছে কমিটি।

সূত্রের খবর, ওই প্রস্তাবে অভ্যন্তরীণ ‘অডিট মেকানিজম’কে আবার নতুন করে চাঙ্গা করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ মাঝেমধ্যেই আইনকানুনের ক্ষেত্রে চ্যুতি ঘটছে, অনেক ঘটনা ধরাও পড়ছে না। বলা হয়েছে, কমিটি বার বার বাইরের বিভিন্ন মিশনগুলির আইনকানুন-বিরোধী কাজের প্রমাণ পাচ্ছে। তাই খুব জোরালো ভাবেই মনে করা হচ্ছে যে, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PAC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy