Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছাড়পত্র দিয়েছেন মোদী, কিন্তু সামরিক বাহিনী তৈরি তো?

উরিতে ২০১৬-র সেপ্টেম্বরের হামলা এবং ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-এর পর সেনাবাহিনীকে জরুরি ভিত্তিতে ট্যাঙ্ক-ঘাতক ক্ষেপণাস্ত্র, রাইফেল, গোলাবারুদ ইত্যাদি কিনতে হয়েছিল। কিন্তু তার দাম মেটাতে গিয়ে দেখা যায়, ভাঁড়ে মা ভবানী।

সেনার আধুনিকীকরণের নামে যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তার থেকে বেশি টাকা লাগবে প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র কিনতে। ছবি: পিটিআই।

সেনার আধুনিকীকরণের নামে যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তার থেকে বেশি টাকা লাগবে প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র কিনতে। ছবি: পিটিআই।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:১১
Share: Save:

উরিতে ২০১৬-র সেপ্টেম্বরের হামলা এবং ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’-এর পর সেনাবাহিনীকে জরুরি ভিত্তিতে ট্যাঙ্ক-ঘাতক ক্ষেপণাস্ত্র, রাইফেল, গোলাবারুদ ইত্যাদি কিনতে হয়েছিল। কিন্তু তার দাম মেটাতে গিয়ে দেখা যায়, ভাঁড়ে মা ভবানী।

গত বছর সেনাবাহিনীর উপপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সরথ চাঁদ সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছিলেন, সেনার শতকরা ৬৮ ভাগ অস্ত্রশস্ত্রই ‘ভিন্টেজ’। মাত্র ৮ শতাংশ অস্ত্রশস্ত্র অত্যাধুনিক। ২৪ শতাংশ অস্ত্রশস্ত্রকে নতুন বলা চলে। তা সত্ত্বেও মোদী সরকারের থেকে টাকা মিলছে না। সেনার আধুনিকীকরণের নামে যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তার থেকে বেশি টাকা লাগবে প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র কিনতে।

পুলওয়ামায় হামলার পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছেন, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিতে সামরিক বাহিনীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, সামরিক বাহিনী তৈরি তো? সামরিক বিশেষজ্ঞদের যুক্তি, সার্জিকাল স্ট্রাইক-এ সেনার সাফল্য নিয়ে মোদী সরকার ঢাক পিটিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান এবং প্রয়োজনে চিনকে একসঙ্গে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা সেনা বা বায়ুসেনার রয়েছে কি না, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুন: পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা নিয়ে উঠছে যে যে প্রশ্ন

২০০১-এ সংসদে জঙ্গি হামলার পরে বাজপেয়ী সরকার নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিপুল সংখ্যায় সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ৫ লক্ষ জওয়ান, তিনটি ট্যাঙ্ক-সজ্জিত ডিভিশন ও তাদের সঙ্গে স্ট্রাইক কোর মোতায়েন করতে তিন মাস সময় লেগে যায়। তত দিনে পাক সেনা নিয়ন্ত্রণরেখার উল্টো দিকে নিজেদের শক্তি বাড়িয়ে ফেলেছে। সেই ‘অপারেশন পরাক্রম’এ ১০ মাস পরে সেনা প্রত্যাহার করতে হয়।

আরও পড়ুন: পাকিস্তান এ বার সতর্ক, বদলার পথ খুঁজছে দিল্লি

এর পরেই ‘কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন’, অর্থাৎ সীমান্ত ও নিয়ন্ত্রণ রেখায় দ্রুত সেনা মোতায়েনের রণকৌশল তৈরি করে সেনা। সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়ত আগেই জানিয়েছেন, সেই নীতি মেনে এখন ৮ থেকে ১০ হাজার সেনা, কামান, ট্যাঙ্ক, ক্ষেপণাস্ত্র, ঘাতক হেলিকপ্টার নিয়ে আট থেকে দশটি ‘ইন্টিগ্রেটেড ব্যাটল গ্রুপ’ বা ‘আইবিজি’ তৈরির কাজ চলছে। কিন্তু তার জন্য আরও অর্থ দরকার।

সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এগুলি জানেন?

সেনা সূত্রের বক্তব্য, যথেষ্ট যুদ্ধের ট্যাঙ্ক নেই। স্বয়ংচালিত কামান, আকাশ হামলা থেকে ট্যাঙ্ক বাহিনীকে রক্ষা করার জন্য ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’-এর অভাব। আর পুরো দমে যুদ্ধ হলে দু’সপ্তাহের আগেই গোলাবারুদ ফুরিয়ে যাবে। বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বীরেন্দ্র সিংহ ধানোয়া বলেছেন, অনুমোদিত ৪২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমানের মধ্যে মাত্র ৩১ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান রয়েছে। এস-৪০০, রাফাল যুদ্ধবিমান এলে ঘাটতি কিছুটা মিটবে। কিন্তু ৪২ স্কোয়াড্রনও পাকিস্তান, চিনকে একসঙ্গে টক্কর দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE