ইমরান জমানায় জইশের আরও বাড়বাড়ন্ত হবে বলেই আশঙ্কা করছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। ছবি: রয়টার্স।
জইশ-ই-মহম্মদের উপর যথেষ্ট কৃতজ্ঞতা রয়েছে ইসলামাবাদের তখতে থাকা পাকিস্তান-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং তাদের নেতা ইমরান খানের। আর তাই ইমরান জমানায় জইশের আরও বাড়বাড়ন্ত হবে বলেই আশঙ্কা করছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। পিটিআই-জইশ সম্পর্ক এতটাই মধুর যে আন্তর্জাতিক জঙ্গি অর্থায়নে নজরদারি সংস্থা এফএটিএফ (ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স)-এর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জইশ তথা মাসুদকে মদত দিয়ে যাচ্ছে পাক সরকার। পুলওয়ামা-কাণ্ড তারই ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।
জইশের মতো জঙ্গি সংগঠনকে পুঁজি জোগানো বন্ধ করার জন্য পাকিস্তানকে নির্দেশ দিয়েছিল এফএটিএফ। যার সময়সীমা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর। সেটি না হলে বড়সড় নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়তে হবে পাকিস্তানকে। এ ব্যাপারে ২৬ দফা কর্মসূচির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ইসলামাবাদ। কিন্তু তার পরেও জইশের গাঁয়ে আঁচ লাগে এমন একটি পদক্ষেপও করতে দেখা যায়নি ইমরান সরকারকে। বরং সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, প্রত্যেক হজযাত্রীকে ১২ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হয়েছে জইশ-এর তহবিলে!
পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে বিশ্বাসঘাতক (ইসলাম এবং পাকিস্তানের প্রতি) হিসাবে তুলে ধরে লাগাতার প্রচার করে গিয়েছে জইশ। পাশাপাশি ইমরানের জনসভায় ভিড় বাড়ানো থেকে শুরু করে সব রকম সহায়তার হাত বাড়িয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি। ক্ষমতায় এসে ইমরান তার প্রতিদান দিতে শুরু করেছেন। পঞ্জাবের বাহাওয়ালপুর শহরে ১৫ একর জমির উপর একটি প্রাসাদোপম ভবন বানাচ্ছে জইশ। এখন তাদের যে সদর দফতর রয়েছে, প্রস্তাবিত ভবনটি তার থেকে পাঁচ গুণ বড়। দক্ষিণ পঞ্জাবের গ্রামাঞ্চল থেকে কয়েক হাজার কিশোর যুবাকে এনে ‘প্রশিক্ষণ’ দেওয়ার পরিকাঠামো থাকছে সেই ভবনে। থাকছে গণ-রান্নাঘর, চিকিৎসাকেন্দ্র, ক্লাসঘরের পাশাপাশি মাটির তলায় একটি চেম্বারও। সেখানে গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সম্প্রতি একটি লেখায় মাসুদ আজহার পঞ্জাবের তরুণদের সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন-এর মোহে না পড়ে খেলাধুলো এবং গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বহুত বড়ি গলতি’, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষার হুঁশিয়ারি মোদীর, সেনাবাহিনীকে ‘স্বাধীনতা’
অথচ পাকিস্তানের ‘জাতীয় সন্ত্রাস-বিরোধী কর্তৃপক্ষে’র ওয়েবসাইটে বলা রয়েছে জইশ পাকিস্তানের ৩৩টি বেআইনি জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে একটি। কিন্তু পাক সরকারের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ২০১৬ সালে পাঠানকোট হামলার পরে এক বারই মাত্র তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শরিফ জইশের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়েছিলেন। স্বীকার করেছিলেন, ওই হামলার পিছনে জইশ তথা মাসুদ আজহারের হাত রয়েছে। তিনি মাসুদকে গ্রেফতারের নির্দেশও দেন। কিন্তু পাক সেনা কর্তারা বিষয়টির মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং মাসুদ নিশ্চিন্তে জেহাদি কাজকর্ম, জনসভা চালিয়ে যায়। আইএসআই-এর হেফাজতে কিছু দিন গৃহবন্দি থেকেই সে যাত্রা পরিস্থিতি সামলে নিয়েছিল আজহার।’
আরও পড়ুন: নিরাপত্তা উপদেষ্টা কী করছিলেন: মমতা
ইমরানের দলের পক্ষে শুক্রবারও বিবৃতি দিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের যোগাযোগের কথা বলে ভারত সরকার আবহাওয়া গরম করছে।’ বিদেশ মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, এই বিবৃতিতেও আসলে জইশকে আড়াল করার চেষ্টাই করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy